ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

শিক্ষার্থীদের ভাবনায় শোকাবহ আগস্ট

আজহার মাহমুদ

প্রকাশিত: ০০:৪৬, ২০ আগস্ট ২০২৩

শিক্ষার্থীদের ভাবনায় শোকাবহ আগস্ট

জেবিন তাসনিম খান, আরাফাত হোসেন, মো. রাকিব ও বিপ্লব হোসেন

আগস্ট মানে বাঙালির শোকের মাস, বেদনার মাস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে আগস্ট কতটা শোকাবহ সেটা ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়। বাঙালির ইতিহাসে কলঙ্কিত এক অধ্যায় সূচিত হয়েছে এ মাসেই। ১৯৭৫ সালের এ মাসেই বাঙালি জাতি হারিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেদিন ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালসহ পরিবারের মোট ২৬ জন শহীদ হয়েছেন। ইতিহাসের এই ঘৃণ্যতম ঘটনাটা বাঙালির জন্য বেশ পীড়াদায়ক। এই ১৫ আগস্ট সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কাছ 
থেকে মতামত নিয়েছেন- আজহার মাহমুদ

আগস্ট মানে চোখের কোণে জল
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানোর মাস শোকাবহ আগস্ট। আগস্ট মানে চোখের কোণে জল। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ছিলেন অবিসংবাদিত নেতা, ইতিহাসের মহানায়ক। যার জন্ম না হলে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। যিনি ছিলেন রাজনীতির রাজপুত্র, এশিয়া মহাদেশের রাজনীতিবিদদের আদর্শ, বাঙালি জাতির প্রাণপুরুষ। যার ডাকে সারা দিয়ে এই মাতৃভূমির আপামর জনসাধারণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ৩০ লাখ শহীদদের রক্তের বিনিময়ে শত্রুদের পরাজিত করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল ঘাতক সেনা কর্মকর্তা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। ভাগ্য ভালো যে, ওই বর্বরোচিত হামলার সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যায়। বঙ্গবন্ধুকে মীরজাফররা স্বাধীনতার সুখ বেশিদিন ভোগ করতে দেয়নি, তার লালিত স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। 

জেবিন তাসনিম খান
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ

বঙ্গবন্ধু হত্যা, একটি স্বপ্নের অকাল মৃত্যু
বিশ্ব-মানচিত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ইতিহাস আসলেই যে নামটি চলে আসবে তিনি হলেনÑ স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শুধু স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেই যাননি, তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন, রাজনীতি শিখেছেন, সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে ইচ্ছা-আকাক্সক্ষা- চাহিদা অনুধাবন করেছেন, তারপর দায়িত্ব নিয়েছেন। এক কথায় এক লাফে তিনি খোকা হতে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেননি। শত সংগ্রাম রয়েছে এই মহান মানুষটির। তিনি ধাপে ধাপে তৃণমূল হতে প্রতিটি পথ অতিক্রম করে পরিপক্ব হয়েছেন। পশ্চিম পাকিস্তানিদের শাসন ও শোষণ নির্যাতন হতে মুক্তি পেতে তিনি এগিয়েছেন কৌশলি হয়ে। তাঁর সম্মোহনী নেতৃত্বে সাধারণ মানুষ তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করেন। ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে বিজয় অর্জন করে স্বাধীন বাংলাদেশে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিজয় অর্জনে সবচেয়ে সহায়ক ভূমিকা রাখেন তাঁর সম্মোহনী নেতৃত্বের গুণে। 

গাজী মো. আরাফাত হোসেন 
শিক্ষার্থী, স্নাতক ৩য় বর্ষ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
চট্টগ্রাম কলেজ

আগস্ট হলো বাঙালি জাতির জন্য কালো অধ্যায়
আগস্ট মাস হলো আমাদের জন্য খুবই কলঙ্কময় একটি মাস। এই মাসেই বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দুই কন্যা ব্যতীত তার পুরো পরিবারসহ কিছু দেশদ্রোহী তাঁর নিজ বাড়িতে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। আসলে এই অধ্যায়টি আমাদের অকৃতজ্ঞ জাতিতে পরিণত করেছে। কেননা যে মুজিব না হলে বাঙালি জাতি পাকিস্তানিদের সকল অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস করত না। তাছাড়া যে মুজিবের ৬৬ সালের ৬ দফা এবং ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে সেই মুজিবকেই এদেশের কিছু দেশবিরোধী মানুষ হত্যা করেছে।
 
মো. রাকিব
শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, সরকারি সিটি 
কলেজ চট্টগ্রাম।

তিনি ইতিহাসে চিরঅম্লান
পাকিস্তানের শোষকদের হাত থেকে মুক্তি পেতে যে বিশাল সংগ্রাম বাঙালি করেছে তা অনুভব করলেই যার নাম সবার আগে ভেসে ওঠে তিনি শেখ মুজিব। স্বাধীনতার মহানায়ক। আমরা এমন একজন মানুষকে নেতা হিসেবে পেয়েছিলাম যার বজ্রকণ্ঠী প্রতিবাদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি শত ষড়যন্ত্র, অপচেষ্টা ও শোষণের দেওয়াল। শুধু স্বাধীনতা অর্জনই নয়, যখন সদ্য স্বাধীন দেশের চারদিকে যখন ধ্বংসস্তূপ, পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতার ছাপ; যখন কোনো দক্ষ প্রশাসন বা রাষ্ট্রীয় কোষাগার ছিলো না, তখন পাহাড়সম বাধা সামনে নিয়ে বঙ্গবন্ধু করেছেন নয়া সংগ্রাম। আমাদেরকে দিয়েছেন আত্মপরিচয়। বাঙালির নিজেকে জয়ের প্রতিটি স্তরে যিনি পথ দেখিয়েছেন পাঞ্জেরি হয়ে।

বিপ্লব হোসেন
শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, যশোর 
সরকারি সিটি কলেজ। 

×