
ছবি: জনকণ্ঠ
বগুড়ার গাবতলীতে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী আকবর আলী প্রাং ওয়াক্ফ এস্টেট (ইসি নম্বর- ১১৫৮২) বর্তমানে চরম সংকটে পড়েছে। এস্টেটের মোতওয়াল্লী পদে নিয়োগ বিলম্বিত হওয়ায় স্টেটের সুশাসন ও সম্পত্তি রক্ষায় দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
এ বিষয়ে সোমবার (১২ মে) বগুড়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এস্টেটের বৈধ উত্তরাধিকারী ও মোতওয়াল্লী প্রার্থী মো. গোলাম রব্বানী প্রাং প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আইনি প্রক্রিয়া মেনে পরিচালিত এই ওয়াক্ফ এস্টেট বর্তমানে প্রশাসনিক গাফিলতির কারণে হুমকির মুখে পড়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আকবর আলী প্রাং কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই ওয়াক্ফ এস্টেটের দায়িত্ব প্রথমে দলিলদাতা নিজেই গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে স্ত্রীর মাধ্যমে দৌহিত্র মজিবর রহমান খাঁ এবং পরে দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে আদালতের নির্দেশে মো. আবু তাহের প্রাং-কে বৈধ মোতওয়াল্লী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি, সাড়ে পাঁচ শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এস্টেট বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
তবে দুঃখজনকভাবে, তার প্রতিপক্ষ মামুনুর রশিদ খাঁ ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর এস্টেটের বালিয়াদীঘি মৌজার ১০ বিঘা সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করেন এবং এর আগের বছর ১৫ মে ফসল লুটপাট করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত ২০৪ সি/২২ (গাব) মামলায় সিআইডির তদন্তে অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত হন। অভিযুক্ত পাঁচজন এক মাস ২০ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান।
এ ছাড়া, ক্ষতিপূরণের দাবিতে আবু তাহের প্রাং বগুড়ার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ৪৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকার একটি মামলা দায়ের করেন, যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
২০২৫ সালের ২১ জানুয়ারি আবু তাহের প্রাং মৃত্যুবরণ করলে মোতওয়াল্লী পদটি শূন্য হয়। এরপর মো. গোলাম রব্বানী প্রাং ওয়াক্ফ দলিল অনুযায়ী উত্তরাধিকার হিসেবে ওয়াকফ প্রশাসনে আবেদন করেন এবং এস্টেট কমিটির রেজুলেশন অনুযায়ী তাকেই পরবর্তী মোতওয়াল্লী হিসেবে সুপারিশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, “প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষ পর্যায়ে থাকলেও এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে নিয়োগ আদেশ জারি হয়নি। এতে দখলদারদের সাহস আরও বেড়ে গেছে, স্টেটের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।”
তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তিন দফা দাবি জানান
১. দ্রুত মোতওয়াল্লী নিয়োগ চূড়ান্ত করে সরকারি আদেশ জারি করা।
২. জবরদখলকারী দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ।
৩. ক্ষতিপূরণ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ও স্টেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এ সময় তিনি প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা এবং স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তেরও নিন্দা জানান। এলাকাবাসীর মতে, এস্টেটটি ধর্মীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। দ্রুত প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত না এলে এটি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
শহীদ