
উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে পাঠদান বন্ধের পর এবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের শিক্ষকদের কাছে চিঠি দিয়ে এ ঘোষণা করেছেন।
আজ রবিবার (১১ মে) বিকেলে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে ববি’র ইতিহাস বিভাগের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগের চেয়ারম্যানসহ সব শিক্ষকের কাছে খোলা চিঠি দেয়া হয়েছে। উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হলেও সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা, পরিবহন সেবা, লাইব্রেরি ও মেডিক্যালসহ অন্য জরুরি সেবা এর আওতামুক্ত থাকবে।
শিক্ষকদের প্রতি আন্দোলনকারীদের খোলা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় গত ২৬ দিন ধরে চলমান আন্দোলন সবশেষ একদফা তথা অপেশাদার, মামলাবাজ, অযোগ্য উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে উপনীত হয়েছে।
এ দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ ও আপোষহীন। সরকার আমাদের দাবির প্রতি এখন পর্যন্ত কর্ণপাত করেনি। দীর্ঘদিন আন্দোলনের কারণে আমাদের আর পেছনে ফিরে যাওয়ার নূন্যতম জায়গা নেই।
দাবি আদায়ের এই আপোষহীন লড়াইয়ে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে আমরা ১২ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক শাটডাউন ঘোষণা করছি।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শীঘ্রই এই বাকরুদ্ধ পরিবেশ থেকে মুক্তি পেয়ে সৃজনশীল গতিময় একাডেমিক জীবনে ফেরত যাবো বলে আশাবাদী। ততক্ষণ আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে ঘোষিত কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে আপনাদের পূর্বনির্ধারিত সকল একাডেমিক ক্লাস বন্ধ রাখার সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, চলমান এক দফা দাবিতে আন্দোলনে আমাদের সাথে এখন পর্যন্ত ১৮টি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা বিবৃতির মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ করেছেন। যেটি জোরালো জনমত হিসেবে কাজ করছে। সব সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শিক্ষকদের বিষয়টি অবহিত করেছি, যেন শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তারাও ক্লাস বর্জন করেন।
শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউনের বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মো. মহসিন উদ্দিন বলেন, আমি এখনও চিঠি দেখিনি, তবে শিক্ষার্থীদের খোলা চিঠির বিষয়টি অন্যদের কাছ থেকে শুনেছি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিক যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে স্বৈরাচারের পুর্নবাসন ও জুলাই আন্দোলনের পক্ষে অবস্থানকারীদের হয়রানির অভিযোগ তুলে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
ইতোমধ্যে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৪৬ জন শিক্ষক বিবৃতি দিয়েছেন।
রাজু