
নেইম্রা মারমা
প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষাসেবা পৌঁছে দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে চলেছে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। বাউবির শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বপ্ন জয় করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অবদান রাখছেন বাউবির অনেক শিক্ষার্থীই। তাদেরই একজন নেইম্রা মারমা। নেইম্রা মারমা বয়স ৩০ বছর। খাগড়াছড়ি শহরে বসবাস করেন। বাউবির থেকে এইচএসসি ও বিএ/বিএসএস পাস করেছেন। ছোট বেলা থেকেই ভলো ছাত্রী ছিলেন তবে হঠাৎ মায়ের মৃত্যু ও পারিবারিক কারণে ২০১০ সালে জেনারেল শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসির রেজাল্ট খারাপ হলে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।
মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। সাত ভাইবোনের মধ্যে নেইম্রা সবার ছোট। তার অন্যান্য ভাইবোনেরা সবাই প্রতিষ্ঠিত। স্থানীয় একজনের কাছে বাউবি সম্পর্কে শুনে বাউবির খাগড়াছড়ি উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে উৎসাহিত হয়ে ভর্তি হন খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ স্টাডি সেন্টারে এইচএসসি প্রোগ্রামে। নতুন করে জীবন শুরু করেন। অদম্য সাহসিকতা নিয়ে সামান্য টাকা লোন করে পাশাপাশি শুরু করেন ছোট্ট কলেবরে আধুনিক রেস্টুরেন্ট ব্যবসা। নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই যোগাড় করেন। বাউবি থেকে এইচএসসি পাস করার পর মনোবল আরও বেড়ে যায় ভর্তি হন বাউবির বিএ/বিএসএস প্রোগ্রামে। রাত-দিন পরিশ্রম করে যখনই সময় পেতেন কাজের ফাঁকে ফাঁকে রেস্টুরেন্টেই বাউবির বই নিয়ে বসতেন। দৃঢ়চেতা মনোবলের কারণে বাউবি থেকে ভালো রেজাল্ট নিয়ে বিএ/বিএসএস সম্পন্ন করেন। তিনি বাউবি থেকেই মাস্টার্স প্রোগ্রাম করতে চান।
নেইম্রা মারমা খাগড়াছড়িতে আধুনিক রেস্টুরেন্ট ব্যবসার একজন সফল উদ্যোক্তা। তার প্রতিষ্ঠিত স্বপ্নচূড়া রেস্টুরেন্ট ও বিনোদন পার্ক খাগড়াছড়ি শহরের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। তার ব্যবসার কলেবর বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে। দেশের জিডিপির উন্নয়নে কাজ করতে চান নেইম্রা। বাউবির শিক্ষার্থীসহ খাগড়াছড়ির বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থীই নেইম্রা মারমার প্রতিষ্ঠানে কাজ করে লেখাপড়া করছেন। প্রতিদিন তার প্রতিষ্ঠানে টুরিস্ট, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণির মানুষ আসেন। নেইম্রা তাদের বাউবির গল্প শোনান।
সমাজের অসহায় মানুষের প্রতিষ্ঠান বাউবি। কাজ করে বাউবিতে লেখাপড়া করা যায়। বাউবির অনলাইন পদ্ধতির শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের লেখাপড়ার পথ সহজ করে আত্ম কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। তার মতে বাউবির শিক্ষার্থীদের শ্রম ও ঘামে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে সহায়ক হয়েছে। তিনি বলেন বাউবি আমার জীবনের জন্য আশীর্বাদ। বাউবি না থাকলে কাজ করে লেখাপড়া করতে পারতাম না এবং এ পর্যন্ত আসতে পারতাম না, বাউবি আমার স্বপ্ন পূরণ করেছে।