ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

‘সিগারেটে কার্যকর করারোপে বাড়তি আসবে ১০ হাজার কোটি টাকা’

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৩১, ১০ মার্চ ২০২৪; আপডেট: ২২:৩৩, ১০ মার্চ ২০২৪

‘সিগারেটে কার্যকর করারোপে বাড়তি আসবে ১০ হাজার কোটি টাকা’

সিগারেট। ফাইল ছবি।

সিগারেট ব্যবহার কমিয়ে আনার সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো- কার্যকর করারোপের মাধ্যমে এই ক্ষতিকারক পণ্যের খুচরা মূল্য বাড়িয়ে এগুলোর সহজলভ্যতা কমানো। বাংলাদেশে প্রতি বছর অল্প করে সিগারেটের দাম বাড়লেও সে তুলনায় মূল্যস্ফীতি ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি বেশি হওয়ায় সিগারেট সহজলভ্যই থেকে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়িয়ে এগুলোর ওপর কার্যকর করারোপের প্রস্তাবনা সামনে এনেছে বিভিন্ন তামাক-বিরোধী নাগরিক সংগঠন এবং দেশী-বিদেশী গবেষকবৃন্দ। 

এই প্রস্তাবনা বাস্তবায়িত হলে সিগারেট ব্যবহারের হার ১৫.১ শতাংশ থেকে কমে ১৩.৮ শতাংশে নেমে আসবে। পাশাপাশি সিগারেট বিক্রি থেকে আসা করের পরিমাণও আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি হবে (প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়তি কর)। 

রবিবার (১০ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপের প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের হেড অব প্রোগ্রামস শাহীন-উল-আলম।

উন্নয়ন সমন্বয় আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে সিগারেটে কার্যকর করারোপের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। সম্পূরক আলোচনা করেন তামাক-বিরোধী অর্থনীতিবিদদের মঞ্চ ‘বাংলাদেশ ইকোনমিস্টস ফর ইফেক্টিভ টোব্যাকো ট্যাক্সেশন (বিইইটিসি)’-এর পাঁচ জন অর্থনীতিবিদ। তারা হলেন- ড. রুমানা হক (অধ্যাপক, অর্থনীতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), গোলাম আহমেদ ফারুকী (ডিন, ব্যবসা এবং ব্যবস্থাপনা অনুষদ, ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয়), হোমায়রা আহমেদ (গবেষণা সহযোগি, বিআইডিএস) এবং ড. নাজমুল ইসলাম (সহযোগি অধ্যাপক, অর্থনীতি, বুয়েট)।  সিগারেটে কার্যকর করারোপের প্রস্তাবনা উত্থাপনের পর এ বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আলোচকবৃন্দ।

ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘নিম্ন স্তরের সিগারেট তুলনামূলক সহজলভ্য হওয়ায় নিম্ন আয়-শ্রেণির মানুষ এবং কিশোর-তরুণরাই এগুলো প্রধানত ব্যবহার করে থাকেন। তাই আসন্ন অর্থবছরে এই স্তরের সিগারেটের দাম শতাংশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি (৩৩ শতাংশ) বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই স্তরের সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৫৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৩ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি মধ্যম, উচ্চ, এবং প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য যথাক্রমে ১৯, ১৫, এবং ১৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব স্তরের সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক হার আগের মতো ৬৫ শতাংশ রাখলেও খুচরা মূল্য বাড়ালে এগুলো বিক্রি থেকে আসা করের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়বে।’

ড. রুমানা হক বলেন, ‘কার্যকর করারোপ করতে হবে যাতে করে ধুমপায়ীদের উচ্চস্তর থেকে নিম্নস্তরে নেমে না আসে। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গড়তে তামাকের উপর করারোপ সবচেয়ে ব্যয়-সাশ্রয়ী পদক্ষেপ বলে মনে করেন বক্তরা।’ 
 

এম হাসান

×