ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

কমলাপুর আইসিডি কার্যালয়

দুই কর্মকর্তা অপসারণের দাবিতে লাইট ফিটিংস ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৫৩, ৮ আগস্ট ২০২৪

দুই কর্মকর্তা অপসারণের দাবিতে লাইট ফিটিংস ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

দুই কর্মকর্তা অপসারণের দাবিতে লাইট ফিটিংস ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

আমদানিকৃত লাইট-ফিটিংস পণ্য খালাসে অতিরিক্ত শুল্কায়নের কারণে আইসিডি কমলাপুরের অসৎ কর্মকর্তাদের অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ করেছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। 
বৃহস্পতিবার দুপুরে কমলাপুর আইসিডি কার্যালয়ের সামনে প্রায় শতাধিক লাইট-ফিটিংস আমদানিকারক ব্যবসায়ী জড়ো হয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় বাংলাদেশ ইলেকট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাদেকুর রহমান সাজু ও ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস কামালসহ উপস্থিত ব্যবসায়ীরা বক্তব্য রাখেন।
তাঁরা জানান, চায়না থেকে আমদানিকৃত লাইট- ফিটিংস পণ্য গত তিন বছর যাবত প্রতিকেজি ৩ ডলার করে শুল্কায়ন করা হচ্ছে। কিন্তু গত ১ আগস্ট হতে বর্তমান আইসিডির দুর্নীতিবাজ ও একরোখা কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন ও এডিশনাল কমিশনার আসাদুজ্জামান ব্যবসায়ীদের ওপর ৭ ডলারে মাল শুল্কায়নের চাপ প্রয়োগ করে। বর্তমান শুল্কায়নের চেয়ে বর্ধিত এ হার প্রায় ১৩৩ শতাংশ বেশি। এতে প্রতিকেজিতে ব্যবসায়ীদের ৬০৭ টাকা বেশি গুনতে হবে, যা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।

এছাড়া বর্তমানে ৩ ডলারে লাইট-ফিটিংস পণ্য বাজারে প্রচুর মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা  কমিশনারদের বাজার যাচাইয়ের অনুরোধ করলে ৫ কার্যদিবস সময় চেয়ে ১ মাস অতিবাহিত করে ৭ ডলারে মাল শুল্কায়নের জন্য প্রভাব বিস্তার করে। শুধু তাই নয়, বাজার যাচাইয়ের রিপোর্ট দেখাতেও অস্বীকৃতি জানান কর্মকর্তারা। ডকুমেন্টস এসেসমেন্ট শেষ করে শুধু ট্যাক্সের অঙ্ক আমদানিকারককে দেয়া হয়, এসেসমেন্ট পেপার দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

শুধু ওনাদের ৭ ডলারকৃত শুল্কায়নের টাকা জমা দেওয়ার পর ডকুমেন্টস আমদানিকারককে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এ অবস্থায় কিছু অসহায় আমদানিকারক কমিশনারদের চাপের মুখে ডকুমেন্টস খালাস করে। ব্যবসায়ীরার এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং যে অন্যায় হয়েছে তা পুনঃশুলকায়ণের মাধ্যমে (৩ ডলার প্রতিকেজি) অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। লাইট-ফিটিংস ব্যবসায়ীরা লিখিত বক্তব্যে আরও জানান, এনবিআর চেয়ারম্যান কর্তৃক হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

এইচএস কোড হয়রানি ও ২৫০-৩০০ শতাংশ জরিমানা আইন বাতিল, হয়রানিমুক্ত ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টি এবং যেসব পণ্য এখনো খালাস হয়নি তা পূর্বের ন্যায় ৩ ডলারে খালাস করার সুযোগ দিতে হবে। শুধু তাই নয়, গত ২৬ মে থেকে অদ্যাবধি ২ মাস আমদানিকৃত লাইট-ফিটিংস পণ্য ডেলিভারি হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে আমদানিকারক পোর্ট শিপিং ডেমারেজ বহন করছে।  এ ছাড়া কমলাপুর আইসিডিতে ৩০ কন্টেনার মাল শুল্কায়ন জটিলতায় আটকে আছে। এতে প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ব্যবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে পড়বেন। 
সাদেকুর রহমান সাজু বলেন, আইসিডি কমলাপুরের অসৎ কর্মকর্তাদের কারণে এ খাতের ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন। একদিকে অতিরিক্ত শুল্কায়ন অন্যদিকে ঘুষ ছাড়া আইসিডি থেকে পণ্য খালাস করা যায় না। ব্যবসায়ীদের মুনাফা খেয়ে ফেলছেন কর্মকর্তারা। এসব অসৎ কর্মকর্তাদের কারণে ব্যবসায়ীরা লোকসান করছেন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। 
এ ব্যাপারে আমরা আগেও প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু কাজ হয়নি। এখন দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসছে। আশা করব, দ্রুত এসব অসৎ কর্মকর্তাদের অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি জানান, সরকারি নির্দেশনা না থাকার পরও অনৈতিকভাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৪ ডলার বেশি নিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করছে।

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গত ১ মাস ৮ দিনের ডেমারেজ চার্জ মওকুফ করতে হবে। লাইট-ফিটিংস আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের এই দাবির সমর্থন দিয়েছেন বাংলাদেশ  ইলেকট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবসায়ী ও সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ (এফবিসিসিআই)।

×