ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১

আগামীকাল আদেশ জারি করবে এনবিআর

রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়ছে

রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আরও এক মাস বাড়ছে

নতুন আয়কর আইন বাস্তবায়ন ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আরও এক মাস বাড়ছে। ইতোমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সময় বাড়ানোর অনুমতি চেয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে। যেখানে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধির সুপারিশ রয়েছে। অনুমোদন পেলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার আদেশ জারি করবে এনবিআর। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর আগে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আরও এক মাস বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) ও ঢাকা ট্যাক্সবারসহ কয়েকটি মহল থেকে এনবিআরে আবেদন করা হয়।

এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো চিঠিতে রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর দাবিতে গত ২১ নভেম্বর চিঠি দেয় সংগঠনটি। এর কারণ হিসেবে এফবিসিসিআই বলেছে, নতুন আয়কর আইন-২০২৩ প্রতিপালন ও আয়কর পরিপত্র বিলম্বে প্রকাশের কারণে এবার করদাতারা প্রস্তুতি নেওয়ার তেমন সময় পাননি। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে অনেক করদাতার পক্ষেই ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনও সময় বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে এনবিআরে চিঠি দেয়। চিঠিতে বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে চলমান হরতাল-অবরোধ, আয়কর আইন-২০২৩ সম্পর্কে করদাতা ও আইনজীবীদের পরিপূর্ণ জ্ঞানের অভাব, ২০২৩-২৪ করবর্ষের পরিপত্র বিলম্বে প্রাপ্তি এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে ২০২৩-২৪ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের নির্ধারিত সময় বাড়ানো প্রয়োজন।
নতুন আয়কর আইনে কর দিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা আছে। কর রিটার্ন দাখিলের নির্ধারিত সময় ৩০ নভেম্বর। 
এদিকে করদাতাদের সুবিধার্থে নভেম্বরের মাসজুড়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেলে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অফিস চলাকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে মেলার পরিবেশে করসেবা দিয়ে যাচ্ছে। যেখানে রয়েছে হেল্প ডেস্ক, রিটার্ন গ্রহণ বুথ, ই-টিআইএন, ই-রিটার্ন ও এ-চালানের আলাদা বুথ। কর অঞ্চল-৮ এর আওতায় ৮০ হাজারের বেশি করদাতা ই-টিআইএন নিবন্ধন নিয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ৫০ হাজারের মতো ব্যক্তি নিয়মিত রিটার্ন দাখিল করে থাকেন। সর্বশেষ পাওয়া তথ্যানুসারে এখন পর্যন্ত ১৯ হাজার ব্যক্তি আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এনবিআরের তথ্যানুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৯৫ লাখের বেশি করদাতা ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন নিলেও এখনো কাক্সিক্ষত রিটার্ন দাখিল হয়নি বলে জানা গেছে। গত অর্থবছরে ৩৫ লাখ ২৯ হাজার রিটার্ন দাখিল করা হয়েছিল। যদিও প্রত্যাশা অনুযায়ী এখনো অনেক পিছিয়ে আছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরে অন্তত ৪০ লাখ রিটার্ন দাখিলের প্রত্যাশা করছে এনবিআর। এনবিআরের একাধিক কর কমিশনার বলেন, যত সময় যাচ্ছে করদাতাদের চাপ তত বাড়ছে। আশা করছি আমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। তবে আমাদের কাছেও সময় বৃদ্ধির বিষয়টি শেয়ার করছেন।

এটা এনবিআর সিদ্ধান্ত নিবে, আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। সাধারণত কোনো ব্যক্তি-করদাতার আয় যদি বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি হয়, তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি, নারী ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের করদাতার আয় যদি বছরে ৪ লাখ টাকার বেশি হয়, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে পাঁচ লাখ টাকার বেশি হয় এবং প্রতিবন্ধী করদাতার আয় সাড়ে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি হলে তার রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া আরও অনেক কারণে ব্যক্তিকে আবশ্যিকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। চলতি অর্থবছর থেকে শুধু রিটার্ন দাখিল করলেই হবে না, বিভিন্ন সরকারি সেবা পেতে হলে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্রও দেখাতে হবে। আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২০২৪ অনুযায়ী ৪৪ ধরনের সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যে কারণে রিটার্ন দাখিলের বিকল্প নেই  ই-টিআইএনধারীদের।

×