
ঢাকার পুরান শহরের বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত আহসান মঞ্জিল শুধু স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন নয়, এটি নবাবি ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী। এক সময় ঢাকার নবাব পরিবারের প্রাসাদ ও সদর কাচারি হিসেবে ব্যবহৃত এই ভবন বর্তমানে একটি জাদুঘর। আহসান মঞ্জিলের ইতিহাস শুরু হয় ১৮৫৯ সালে। ঢাকার নবাব আবদুল গনি তাঁর পুত্র খাজা আহসানুল্লাহর নামে এটি নির্মাণ করেন।
এর আগেও এখানে শেখ ইনায়েতউল্লাহর ‘রংমহল’ নামে একটি প্রমোদভবন ছিল, যা পরবর্তীতে ফরাসি বণিকদের হাত ঘুরে নবাবদের অধিকারে আসে। ১৮৭২ সালে প্রাসাদের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়।
দৃষ্টিনন্দন গম্বুজ, ত্রি-তোরণবিশিষ্ট প্রবেশদ্বার, নাচঘর, দরবার কক্ষ, পাঠাগার—সব মিলিয়ে প্রাসাদটি ছিল রাজকীয় আভিজাত্যের প্রতীক। ভবনটির দুটি অংশ—পূর্বে বৈঠকখানা ও পাঠাগার এবং পশ্চিমে ছিল নাচঘর ও আবাসিক কক্ষ।
জাদুঘর হিসেবে রূপান্তর
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ভবনটি ধ্বংসপ্রায় হলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবন করে এটি জাদুঘরে রূপান্তরের নির্দেশ দেন। সংস্কার শেষে ১৯৯২ সালে এটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
কী আছে জাদুঘরে?
বর্তমানে এখানে ৪,০৭৭টি নিদর্শন প্রদর্শন করা হয় ২৩টি কক্ষে। নবাবদের ব্যবহৃত আসবাবপত্র, তৈলচিত্র, হস্তলিখিত দলিল, অলঙ্কার, রাজকীয় পোশাক থেকে শুরু করে হাতির খুলি পর্যন্ত রয়েছে সংগ্রহে। ৯টি কক্ষ সাজানো হয়েছে ১৯০৪ সালের আলোকচিত্রের ভিত্তিতে।
কীভাবে যাবেন?
ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে গুলিস্তান বা সদরঘাট রুট ধরে রিকশা বা সিএনজিতে করে সহজেই পৌঁছানো যায়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বা ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে এটি খুব কাছেই।
খাওয়া-দাওয়া
আহসান মঞ্জিল ঘুরে ক্ষুধা পেলে চিন্তার কারণ নেই। আশেপাশে রয়েছে পুরান ঢাকার বিখ্যাত কাচ্চি বিরিয়ানি ও আরও নানা স্বাদের খাবার।
সানজানা