ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নতুন আবিষ্কারে বদলে যাবে সব ডাইনোসরের ছবি!

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:২৪, ৪ জুন ২০২৫

নতুন আবিষ্কারে বদলে যাবে সব ডাইনোসরের ছবি!

ছবি: সংগৃহীত

ডাইনোসরদের মুখমণ্ডল নিয়ে এতদিন যেসব ধারণা প্রচলিত ছিল, তা এবার ভেঙে দিচ্ছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা। নতুন গবেষণায় প্রমাণ মিলেছেডাইনোসরের গালে মেদবহুল, চর্বিযুক্ত গঠন ছিল, যা আগে কেবল স্তন্যপায়ীদের মধ্যেই দেখা যেত।

এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে Journal of Anatomy-তে। গবেষকরা বলছেন, এই গঠন শুধু চেহারার দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং চিবানোর প্রক্রিয়া খাদ্য গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতো। অর্থাৎ ডাইনোসরের চোয়াল ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে অনেক বেশি জটিল এবং স্তন্যপায়ীদের মতো নিখুঁত ছিল।

গবেষণায় যে নতুন নরম টিস্যুর সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে, তা একটি বিশেষ সংযোজক গঠনযার নাম দেওয়া হয়েছে এক্সোপারিয়া। এই এক্সোপারিয়া ছিল ডাইনোসরের চোয়াল গালের হাড় এর মধ্যে একটি মজবুত সংযোগকারী টিস্যু, যা চোয়ালের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করত।

গবেষকরা বলছেন, এই টিস্যু ডাইনোসরের মাথার খুলির গঠন এবং চোয়ালের চলাচলের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করত, যা চিবানোর সময় বিশেষভাবে কার্যকর হতো।

গবেষণাটিতে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছে THLEEP (Three-dimensional HistoLogical Enthesis Entry-angle Prediction) নামে একটি নতুন বিশ্লেষণ পদ্ধতি। এই পদ্ধতি দিয়ে গবেষকরা ১০টি ডাইনোসর আকৃতির জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে বুঝতে পেরেছেন কোথায় এবং কীভাবে নরম টিস্যুগুলো যুক্ত ছিল।

ডাইনোসরদের এতদিন যেভাবে ছবিতে আঁকা বা মডেলে দেখানো হতোচামড়া টানটান, গাল চ্যাপ্টা, হাড়ের গঠন স্পষ্টসেই ছবি এবার পাল্টে যেতে পারে। নতুন গবেষণা অনুযায়ী, ডাইনোসরের গালে স্তন্যপায়ীদের মতো চর্বিযুক্ত পেশি থাকত, যা তাদের খাবার চিবানোর সময় সহায়তা করত।

গবেষকরা বলছেন, এক্সোপারিয়া থাকার মানে হলো, ডাইনোসররা এমনভাবে চিবাতে পারত যা স্তন্যপায়ীদের মতো নিখুঁত কন্ট্রোলড। এমনকি তাদের চিবানোর শব্দও হতে পারত অনেকটা গরু বা ঘোড়ার মতো।

যদিও কোনো জীবাশ্মে সরাসরি গাল বা চর্বিযুক্ত টিস্যু সংরক্ষিত পাওয়া যায়নি, তবে হাড়ের গঠনে স্পষ্ট সংকেত রয়েছে যে সেখানে নরম টিস্যুর সংযোগ ছিল। এই নতুন তথ্য ডাইনোসরদের মুখ গঠন খাদ্যাভ্যাস বোঝার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

এই আবিষ্কার শুধু ডাইনোসরদের জীবনযাত্রা নয়, বরং জীবাশ্মবিদ্যার জগতে এক গুরুত্বপূর্ণ পালাবদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে। স্তন্যপায়ীদের মতো চোয়ালের নিয়ন্ত্রণ থাকা ডাইনোসরদের খাদ্যাভ্যাস, সামাজিক আচরণ বিবর্তন সবকিছুতেই নতুন করে ভাবতে হবে বিজ্ঞানীদের।

মুমু

×