
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী দেখছেন এক দর্শনার্থী
সংস্কৃতি প্রতিবেদক ॥ বাণিজ্যিক ধারার সিনেমার সমান্তরালে স্বল্পর্দৈঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের রয়েছে বিশেষ শ্রেণির দর্শক। আর সেসব সিনেমাপ্রেমীর জন্য সুসংবাদ। শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে চলছে চতুর্থ বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব। আর শুধু রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ নেই আয়োজনটি। ঢাকার পাশাপাশি আট বিভাগীয় শহরে একযোগে মঙ্গলবার থেকে এই উৎসবের সূচনা হয়। সব মিলিয়ে ৮৯টি চলচ্চিত্রের সম্মিলনে সেজেছে পাঁচ দিনব্যাপী এই উৎসব।
সেই সুবাদে বিনা দর্শনীতে বিচিত্র বিষয়ের ছবি দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শকরা। পাশাপাশি রয়েছে ইতিহাস-ঐতিহ্য কিংবা সংস্কৃতিনির্ভর প্রামাণ্যচিত্র দেখার সুযোগ। সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে বেলা তিনটা-রাত নয়টা পর্যন্ত পৃথক পৃথক সময়সূচিতে প্রদর্শিত হবে এসব ছবি।
উৎসবটি প্রসঙ্গে শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পের প্রসার, বিকাশ এবং মানসম্মত দেশীয় স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীর পাশাপাশি সেগুলোর অন্তর্গত বিষয় অনুধাবন এ উৎসবের অন্যতম বিষয়। তাছাড়া এ ধরনের উৎসবের মাধ্যমে আমরা মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে চাই। মানুষের ভেতরের সৃজনশীলতা বা শিল্পবোধকে উস্কে দিতে চাই।
বুধবার ছিল এ উৎসবের দ্বিতীয় দিন। এদিন শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রদর্শিত হয় লাবনী আশরাফি নির্মিত ফিকশন ধারার ছবি ‘পরবাসী’। এছাড়া দেখানো হয় একই ধারার মোরশেদ হিমাদ্রি হিম নির্মিত ছবি ‘একটি খুনের বিবরণ’, চৈতালী সমাদ্দার নির্মিত ‘লায়লা’, ফুয়াদুজ্জামান ফুয়াদ নির্মিত ‘পেইন্ট অন ড্রাই লিফ’, এ. সাবিতের ছবি ‘হাঙরি ফিল’, নাজমুস সাকিব নির্মিত ‘ফ্যাকরা’, জগন্ময় পাল পরিচালিত ‘গ্রহগ্রস্ত,’ নাজমুল মুহাম্মদ নির্মিত ছবি ‘নেকলেস’, আহসাবুল ইয়ামিন নির্মিত ‘যায় যায় দিন’সহ বেশ কিছু ছবি। অন্যদিকে প্রদর্শিত প্রামাণ্যচিত্রের মধ্যে ছিল মনোয়ার জাহান রনি নির্মিত ‘মৃত্তিকা’ এবং শেখ তানভীর হাসান আবিব নির্মিত ‘হানিফ পাপ্পু : এক শিল্পীর অস্তিত্বের অবসান’।
প্রসঙ্গত, এ উৎসবে সারাদেশ থেকে উভয় ক্যাটাগরি মিলিয়ে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যরে মোট ৩০০টি চলচ্চিত্র জমা পড়ে। এগুলোর মধ্যে ছিল ২০৯টি ফিকশন এবং ৯১টি ডকুমেন্টারি। পরবর্তীতে বাছাই কমিটির মাধ্যমে প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে ৮৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচন করা হয়। যার মধ্যে ৬০টি ফিকশন এবং ২৯টি প্রামাণ্যচিত্র। প্রদর্শিতব্য চলচ্চিত্র থেকে জুরি কমিটি পুরস্কারের জন্য চূড়ান্তভাবে উভয় ক্যাটাগরি থেকে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং বিশেষ জুরি নির্ধারণ করবেন। এছাড়া উভয় ক্যাটাগরি থেকে সার্বিকভাবে চারটি বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হবে।
এগুলো হলো শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ সম্পাদনা, শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা এবং শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পনা। পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শ্রেষ্ঠ নির্মাতা ১ লাখ টাকা এবং বিশেষ জুরি পুরস্কার হিসাবে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়াও বিশেষ পুরস্কারে অর্থমূল্য হিসাবে শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ সম্পাদনা, শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা এবং শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পনা হিসাবে প্রতিটির জন্য ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।