ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহ্যবাহী দেয়াঙ পাহাড়ের জমিদারবাড়ি

আকাশ শীল, কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১১:০৩, ১৮ মে ২০২৫

কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহ্যবাহী দেয়াঙ পাহাড়ের জমিদারবাড়ি

ছবি: আকাশ শীল

বড় উঠান জমিদার বাড়িটি চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়ন এলাকায় অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি যা চট্টগ্রামে মিয়া বাড়ি ও স্থানীয়দের কাছে দেয়াং পাহাড়ের জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। এটি এখন ঝোপ-জঙ্গলে ঢাকা পড়েছে।

মিয়া বাড়িটিকে দেখলে এখন যে কেউ বলবে, এটা ভুতুড়ে বাড়ি ঝোপ-জঙ্গলের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে ইটের যে প্রাসাদটি, এটির রয়েছে নানান  ইতিহাস ও ঐতিহ্য। কিন্তু আদতে সে ইতিহাসের কতটা জনশ্রুতি, কতটা সত্য, তা নিয়েও রয়েছে নানান কথা।

জমিদার মনোহর আলী খানের বংশধর সাজ্জাদ আলী খান মিটু সপরিবারে থাকেন চট্টগ্রাম শহরে। তিনি জানান, ১৬৬৫ সাল থেকে এ পরিবারের জমিদারি শুরু হয়। দীর্ঘ কয়েক শ বছর জমিদারি চলার পর জমিদারিপ্রথা বিলুপ্ত হলে কমতে থাকে জমিদার বংশীয়দের শৌর্যবীর্য। পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে পুরোনো জমিদার বাড়ি।

জমিদার মনোহর আলী খানের অধস্তন সপ্তম পুরুষ ছিলেন ফাজিল খান। তিনি ফাজিল খাঁর হাটের প্রতিষ্ঠাতা। নবম পুরুষ ছিলেন ইলিয়াছ খান। মূল সড়কের পাশে ৩০০ বছর পুরোনো যে মসজিদ রয়েছে, সেটির প্রতিষ্ঠাতা এই ইলিয়াছ খান।

নবাব শায়েস্তা খানের আমল থেকে এ পর্যন্ত ১৯তম বংশধর জমিদারি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সর্বশেষ জমিদার আসাদ আলী খানের পুত্র জমিদার আনোয়ার আলী খান ও সালামত আলী খানের বংশধরের সাত পরিবার বর্তমানে এলাকায় বসাবাস করছে।

দেয়াঙ পাহাড়ের মাটি দিয়ে বিশেষভাবে ইটগুলো তৈরি করা হয়েছিল। এর সঙ্গে চুন-সুরকির মিশেলে স্থাপনাটি নির্মাণ করা হয়। জমিদারের বংশধরেরা ষাটের দশক থেকে ভবনটিতে বসবাস করা বন্ধ করে দেন।

বাড়িটির ইতিহাস আছে। সে ইতিহাস সংরক্ষণ করতে পারলেই পর্যটকেরা এখানে এসে মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে যেতে পারবেন। জমিদার বাড়িতে এখন চট্টগ্রাম শহর থেকে সহজে আসা যায়।  ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেল দিয়ে মাত্র ১০ মিনিটের পথ জমিদারবাড়ি। এ ছাড়া বাসে করে দেশের যেকোনো স্থান থেকে শাহ্ আমানত সেতু নেমে লোকাল বাস বা অটোরিকশায় করেও যাওয়া যায় জমিদার বাড়িতে।

মুমু

×