
.
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে কনকৈইজ গ্রামের সবুজ পাখি বিক্রি করে ১৪ বছরে আয় করেন ১৮ লাখ টাকা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা প্রজাতির পাখি সংগ্রহ করে বিক্রি করে তিনি এখন স্বাবলম্বী। এক সময়ে গ্রামীণ পর্যায়ে পাখির দোকান করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়, এটা কল্পনার বাইরে থাকলেও সেটা করে দেখিয়েছেন নাঙ্গলকোটের সবুজ। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট-মাহিনী সড়ক দিয়ে মাহিনী অথবা নাঙ্গলকোটে যেতে কনকৈইজ মধ্যপাড়া পার হতে সড়কের পাশে চোখ পড়বে রুপিয়া-২ পাখি বিক্রয়কেন্দ্রে কিচির-মিচির শব্দ। সড়কের পাশে খাঁচায় বন্দি রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। দুপুরের পর থেকে এখানে পাখির ক্রেতারা পাখি ক্রয় করতে আসেন। বিক্রেতা সুবজ ক্রেতাদের নিকট পাখি বিক্রি করেন। সবুজ প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার টাকার পাখি বিক্রি করেন। নিজের অসুস্থতায় শখের বশে পাখি বিক্রি করে অবসর সময় কাটানের পাশাপাশি নিজেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন বলে জানান সবুজ। গত ১৪ বছরে মা রুপিয়ার দেওয়া ৪শ’ টাকা পুঁজি থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৮ লাখ টাকা আয় হয়েছে সবুজ। পাখি বিক্রি করে প্রতিমাসে খরচ বাদ দিয়ে তার প্রায় ১৫ হাজার টাকা লাভ হয়। সবুজের গ্রামের বাড়ি উপজেলার মক্রবপুর ইউনিয়নের কনকৈইজ।
পাখির মধ্যে রয়েছে, অস্ট্রিলিয়ান ঘুঘু, লাব্বাক, কোকোডেল পাখি, বাজিগর, পিজ ও কোয়েল। অস্ট্রিলিয়ান ঘুঘু প্রতি জোড়া ৮শ’ টাকা থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকা, লাব্বাক প্রতি জোড়া ২ হাজার ৫শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা, কোকোডাল প্রতিজোড়া ২ হাজার ৫শ’ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা, বাজিগর প্রতিজোড়া ৬শ’ টাকা থেকে ১২শ’ টাকা, পিজ প্রতি জোড়া ৬শ’ টাকা থেকে ১২শ’ টাকা বিক্রি করেন। কোয়েল পাখি প্রতি জোড়া ৬শ’ টাকা থেকে ১৬শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। কবুতরের মধ্যে ময়ুরপঙ্খী, লাল সিরাজ, সাদা-কালো সিরাজ, কিং, বাংলা সিরাজ রয়েছে। তার দোকানে ৬শ’ টাকা থেকে ৬হাজার টাকার পর্যন্ত কবুতর রয়েছে। সবুজ জানান, গত ১৪ বছর পূর্বে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত থেকে দেশে আসি। ওই সময় আমার মা রুপিয়া খাতুন থেকে ৪শ’ টাকা পুঁজি নিয়ে কবুতর পালন শুরু করি। এক সময় আমি হার্টস্টোক করে অসুস্থ হয়ে পড়ি। শখের বসে আমি কবুতর পালন শুরু করি। কবুতর থেকে ভালো লাভ দেখে গত আড়াই বছর পূর্বে বাড়ির পাশে সড়কের পাসে আমার মায়ের নামে রুপিয়া-২ নামে পাখি বিক্রির দোকান শুরু করি। বর্তমানে পাখির লালন-পালন এবং বিক্রির মাধ্যমে নিজে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি অসুস্থতা থেকেও মুক্তি পাচ্ছি। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা এসে কবুতর থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় পাখি ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। দুপুর ১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পাখি বিক্রি করেন সবুজ।
পাখি ক্রয় করতে দোকানে আসা পাশর্^বর্তী মনতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির স্কুল শিক্ষার্থী আমজাদ বলেন, আমি বাহমা মুরগি ক্রয় করতে এসেছি। বাড়িতে অল্প পরিসরে মুরগি লালন-পালন করি। কম দামে এখানে মুরগির বাচ্চা পাওয়া যায়। এজন্য বাহমা মুরগির বাচ্চা ক্রয় করতে এসেছি।
বেলাল হোসেন রিয়াজ, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা