ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

এম এইচ উল্লাহ

ফুটবলে মেয়েদের ইতিহাস

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ২৫ অক্টোবর ২০১৮

ফুটবলে মেয়েদের ইতিহাস

‘বঙ্গের বধূ বুকে তার মধু জল লয়ে যায় ঘরে, মা বলিতে প্রাণ করে আনচান চোখে আসে জল ভরে’ কবিগুরুর এই দুইটি চরণে বঙ্গ ললনাদের পরিচয় মিলে। কিন্তু সেই বঙ্গ ললনারা আজ আর গৃহ কোনে বন্দী নেই। আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তাদের সগৌরব উপস্থিতি। ফুলবল খেলার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। আগে আমরা দেখেছি- ফুটবল ছেলেদের খেলা। আমাদের দেশে মেয়েদের ফুটবল খেলতে আমরা খুব একটা বেশি দেখিনি- কিন্তু ইদানীং মেয়েরা ফুটবলে বেশ পারদর্শী হয়ে উঠেছে। এখনও দক্ষিণ এশিয়ায় অনুর্ধ ১৮ ও অনুর্ধ ১৫ বয়সসীমার মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের নাম গৌরবের সঙ্গে উর্ধে তুলে ধরেছে। চার জাতি কিশোরী ফুটবলে (অনুর্ধ ১৫) অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে আমাদের দেশের মেয়েরা। এখন আবার অনুর্ধ ১৮ বছর বয়সের ফুটবল খেলাতেও বাংলাদেশের মেয়েরা দক্ষিণ এশিয়ার চাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে প্রথমে ভারতের নাম উল্লেখ করতে হয়। তারপর রয়েছে, শ্রীলঙ্গা, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ইত্যাদি দেশ এমনকি মালদ্বীপও ইদানীং ফুটবল ভাল খেলে থাকে। এসব দেশের মেয়েরাও এখন ফুটবল খেলছে। আর তারা খুব ভালভাবে খেলছে। ভারত জনসংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম দেশ। বাংলাদেশের মেয়েরা সেই ভারতকেও হারিয়েছে। শ্রীলঙ্কাও ফুটবলসহ অন্যান্য খেলায় কম যায় না। বাংলাদেশ সেই শ্রীলঙ্কাকেও হারিয়েছে। ইদানীং নেপাল ও ভুটান ফুটবলে বেশ সুখ্যাতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশী মেয়েরা নেপাল ও ও ভুটানের মেয়েদেরও হারিয়েছে। আশা করি আমাদের গর্বের বাংলাদেশী এই মেয়েরা অদূর ভবিষ্যাতেও তাদের এই গৌরব ধরে রাখতে সক্ষম হবে। বঙ্গ ললনাদের এক সময় লজ্জাবতী লতার সঙ্গে তুলনা করা হতো। আজ সেই বঙ্গ ললনারা শুধু ফুটবলে না এমনকি ক্রিকেটেও বেশ সুনাম অর্জন করেছে। সমগ্র এশিয়ায় আমাদের দেশের মেয়েরা খেলাধুলায় বেশ সুনাম অর্জন করতে চলেছে। একটি সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশের জন্য এটা কম গৌরবের কথা নয়। ল্যাটিন ভাষায় একটা কথা আছে ‘ম্যান সানা ইন কর্পোর সানো’ যাকে ইংরেজীতে বলে ‘এ সাউন্ড মাইন্ড ইজ ইন এ সাউন্ড বডি’ আর বাংলায় বলে ‘সুস্থ দেশে সুস্থ মন’। শরীর ও মনকে ঠিক রাখতে হলে খেলা ধুলার কোন বিকল্প নেই। তাই সব রকমের শারীরিক পরিশ্রম যা খেলা ধুলার মাধ্যমে অর্জিত হয় সেটাই আমাদের একান্ত কাম্য। আমাদের মেয়েরা ফুটবলে যে কৃতিত্ব অর্জন করেছে তা ধরে রাখতে হবে। বিশ্ব এখন প্রতিযোগিতার ভূমি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এখন প্রতিযোগিতা চলছে। আর ছোট্ট হয়ে গেছে এই পৃথিবী জ্ঞান বিজ্ঞানের উৎকর্ষ লাভের জন্য। প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে টিকে থাকতে হলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে চাই কঠোর অনুশীলন। ফুটবলও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই তো আমাদের দেশের মেয়েদের এই কৃতিত্ব ধরে রাখতে চাইলে চাই কঠোর অনুশীলন। কারণ অনুশীলনের কোন বিকল্প নেই। -লেকসার্কাস, ঢাকা থেকে
×