বিনিয়োগকারীদের মুনাফায় করারোপ হবে না

পুঁজিবাজারে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর কর আরোপ করা হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। মঙ্গলবার ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকালে সিএমএজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানি ভূইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলীসহ সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) কর্তৃপক্ষ প্রতি বছরই বাংলাদেশকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে একটি ক্যাপিটাল গেইনের ওপরে ট্যাক্স আরোপ করা। কিন্তু এটি বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সম্ভব না। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তারা ক্যাপিটাল গেইনের ওপর ট্যাক্স আরোপ করবে না। 
তিনি বলেন, এখন থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) এবং সেকেন্ডারি মার্কেটের ইনডেক্স দেখা আমার কাজ না। এ দুটিসহ পুঁজিবাজার দেখভালের দায়িত্ব স্টক এক্সচেঞ্জের। আজকে এ বিষয়টি স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে বলে দিয়েছি।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমাদেরও সেদিকে যেতে হবে। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলো বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে করতে হবে। তাহলে জনগণের ওপরে ট্যাক্সের চাপ কমে আসবে। আগামী চার বছরে শেয়ারবাজারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অন্যতম মূল লক্ষ্য হবে। আমেরিকাসহ বিশ্বের উন্নত দেশ বন্ডের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমেরকিায় সবকিছু করা হয় বন্ডের অর্থায়নের মাধ্যমে। দেশটির ট্রিলিয়ন ডলার বন্ড ইস্যু করা রয়েছে, প্রয়োজনেই বন্ড ইস্যু করে। আমাদের দেশ বিষয়টি জানেই না।
তিনি আরও বলেন, আমি বিমান বাংলাদেশকে বলছি, ১০ উড়োজাহাজ কিনতে, তাদের জন্য আমরা বন্ড অনুমোদন দেব। 
তাদের বলেছি, আপনাদের সরকারের কাছে গিয়ে টাকা আনার দরকার নেই। বন্ড ছেড়ে এই টাকায় বিমান কিনবেন। বন্ড ইস্যু করবেন বিদেশীরা কিনে নেবে, আট বছর পর বন্ডের টাকা দিয়ে দেবেন। ৮ বছর পরও যদি বন্ডের টাকা দিতে না পারেন তবে আবার বন্ডের অনুমোদন দিয়ে দেবো। সে টাকা দিয়ে আগের বন্ডের টাকা পরিশোধ করে দেবেন।

তিনি বলেন, করোনার সময় বন্ড, ডেরেভিটস ও কমোডেটিভ মার্কেট নিয়ে এসেছি। এগুলো সম্পূর্ণ হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতির সিনারিও চেইঞ্জ হয়ে যাবে। বন্ডের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন হবে। এটাই হলো আমার প্রধান কাজ। ঋণ নিয়ে কিংবা করের টাকা দিয়ে উন্নয়ন কোনো দিন সম্ভব না। করের বোঝা চাপিয়ে দিলে, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ সবাই ক্ষেপে যায়।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিএসইসিতে দুইবারে আট বছরের বেশি নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ নেই। আমার এরই মধ্যে দুইবার নিয়োগ হয়েছে। তৃতীয়বার নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ নেই। 
তাই আর হারানোরও কিছু নেই। এখন শেয়ারবাজারের জন্য শুধু ভালো কিছু করতে চাই। গত চার বছরে পুঁজিবাজারের অনেক কিছুই চিনতে ও বুঝতে শিখেছি। কে বন্ধু আর শত্রু, তা বুঝি। সে আলোকে আগামীতে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নেবো। তিনি বলেন, সূচক বাড়া-কমা দেখার কাজ বিএসইসির না। আর কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনাও বিএসইসির কাজ না। কিন্তু শেয়ারবাজারের উন্নয়নে এ দুটি কাজ করতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছি।