ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আটার দাম কেজিতে বেড়েছে ১২ টাকা

প্রকাশিত: ২১:৫০, ১৭ মে ২০২২

আটার দাম কেজিতে বেড়েছে ১২ টাকা

অনলাইন রিপোর্টার ॥ টাঙ্গাইলে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তা প্রতি আটার দাম বেড়েছে ৫০০ টাকা। এতে বিপাকে পড়েছে ক্রেতারা। হঠাৎ দাম বাড়ায় ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে বচসা হয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, মিল থেকে দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় বেশি দামে আটা বিক্রি করতে হচ্ছে। মিলাররা বলছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং ভারত গম রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার কারণে বেশি দামে আটা বিক্রি করতে হচ্ছে। আগের মতো গম আমদানি করতে না পারলে দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা গুজব ছড়িয়ে আটার দাম বৃদ্ধি করেছে। সরেজমিন ঘুরে শহরের পার্ক বাজার, ছয়আনী বাজার, সিটি বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি আটার দাম ছিল ৩২-৩৩ টাকা। হঠাৎ দাম বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে তা ৪২-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আটা কিনতে আসা প্রভা রাণী বলেন, ‘আগে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে আটা কিনেছি। সর্বশেষ গত সপ্তাহে ৩২ টাকা কেজি আটা কিনলেও আজকে আটা কিনতে হয়েছে ৪৩ টাকায়। এভাবে যদি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়তে থাকে, তাহলে আমাদের মতো নিম্নবিত্তের মানুষদের না খেয়ে থাকতে হবে।’ অপরজন আফজাল হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ করে আটার দাম বাড়তে তা ভাবতে পারিনি। তাহলে বেশি করে কিনে রাখতে পারতাম। দুই কেজি আটা কিনতে হয়েছে ৯০ টাকা দিয়ে।’ বিক্রেতা নাজমুল হোসেন বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা আটা কিনতাম ১৫০০ টাকা দিয়ে। সেটি আজ কিনতে হয়েছে ২ হাজার টাকায়। এর মধ্যে গাড়ি ভাড়া ও লেবার খরচ আছে। সব মিলিয়ে দুই টাকা লাভে ৪৪-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। গম না পাওয়ার কারণে আটার দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছে মিলাররা।’ অপর ব্যবসায়ী বাপ্পী সাহা বলেন, ‘আগে আটার দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২/৩ টাকা। কিন্তু এক সপ্তাহের ব্যবধানে কখনও ১০ টাকা বাড়তে দেখিনি। আমাদের যেমন কেনা, তেমন বেচা। হঠাৎ দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ক্রেতার সঙ্গে বচসাও হয়েছে। দাম কমলে আমাদের বিক্রিও বেশি হবে।’ টাঙ্গাইল হক ফ্লাওয়ার মিলের স্বত্বাধিকারী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘দেশের উৎপাদিত গম দিয়ে চাহিদা পূরণ হয় না। যে কারণে গম আমদানি নির্ভর। ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে গমের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাজারে গমের দাম বাড়তে শুরু করেছে। অপরদিকে ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণার পর থেকে আমদানিকারকদের কাছ থেকে রীতিমতো আমরা গম কিনতে পারছি না।’ ইসমাইল হোসেন আরও বলেন, ‘বাজারে গমের অভাব রয়েছে। গম না পাওয়ার কারণে আমরা স্বাভাবিক উৎপাদনেও যেতে পারছি না। গমের দাম মণে ৩০০ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়তি দামে গম কিনতে হচ্ছে। এর কারণে বস্তা প্রতি আটা ৫০০ টাকার অধিক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে ১৪৫০ টাকা প্রতি বস্তা বিক্রি হলেও বর্তমানে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের বিক্রিও কম হচ্ছে। ফলে লাভও তেমন হচ্ছে না। মিলে যে পরিমাণ গম মজুদ আছে, তা দিয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ দিন মিল চালানো সম্ভব হবে। এরপর কীভাবে গম কিনবো তা নিজেও বুঝতে পারছি না।’ জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ভারত গম রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার গুজব ছড়িয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা আটার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ভোক্তা অধিকার ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
×