ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত কুয়েট বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশিত: ১৪:০৭, ৩ ডিসেম্বর ২০২১

১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত কুয়েট বন্ধ ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক ॥ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে আজ শুক্রবার (০৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েটে) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় এ জরুরি সিন্ডিকেট সভার ডাক দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়। এ সময় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সভায় উপাচার্যসহ সিন্ডিকেট সদস্যরা অংশ নেন। শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান ভুঁইয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কুয়েটের ৭৬তম জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের জন্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কার কারণে ৩ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হবে। শুক্রবার বিকেল ৪টার মধ্যে আবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের হলত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ৩০ নবেম্বর (মঙ্গলবার) বেলা ৩টায় মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন (৩৮)। সম্প্রতি কুয়েটের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে ফজলুল হক হলের বর্ডার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার অনুগতদের ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচিত করার প্রচেষ্টার জন্য ঘটনার দিন ড. মো. সেলিমের দাপ্তরিক কক্ষে অশালীন আচরণ ও মানুষিক নির্যাতন করে। সাধারণ সম্পাদকসহ উপস্থিত ছেলেরা, হলের প্রভোষ্ট ড. সেলিম হোসেনকে বেশ কয়েকদিন ধরে হুমকি দিয়ে আসছিলেন, তাদের মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচন করার জন্য। তারই ধারাবাহিকতায়, ৩০ নবেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্ররা ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা করা শুরু করে। পরবর্তীতে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করে। সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা ওই শিক্ষকের সঙ্গে রুদ্ধদার বৈঠক করে। পরবর্তীতে শিক্ষক ড. সেলিম হোসেন দুপুরে খাবারের জন্য ক্যাম্পাসের কাছে বাসায় যাওয়ার পর ২টায় তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কিছু সাধারণ ছাত্রের জেরা, অপমান, অবরুদ্ধ করে রাখা ও মানসিক নির্যাতনে তার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর ঘটনায় সাধারণ ছাত্ররা বিক্ষুপ্ত হয়ে অপমৃত্যুর অভিযোগ এনে ড. মো. সেলিমের কফিনসহ অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ভাইস-চ্যান্সেলরের কাছে বিচার চায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলার জোর দাবি জানায়। শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে দোষীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিসহ ৫ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান শিক্ষকরা।
×