ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডেমরায় র‌্যাবের অভিযান ॥ ৩ জনকে কারাদন্ড

অনিয়ম ও প্রতারণার দায়ে আরেকটি হাসপাতাল সিলগালা

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ১৪ জুলাই ২০২০

অনিয়ম ও প্রতারণার দায়ে আরেকটি হাসপাতাল সিলগালা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিভিন্ন অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর ডেমরায় একটি হাসপাতাল সিলগালা করে ভুয়া চিকিৎসকসহ তিনজনকে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। রবিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে হাসপাতালটি সিলগালা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাপ্রাপ্তরা হচ্ছে- এসএইচএস হেল্থ কেয়ার হসপিটাল এ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক্সের চেয়ারম্যান ভুয়া চিকিৎসক মোঃ শওকত হোসেন সুমন, ল্যাব টেকনোলজিস্ট অসীম মন্ডল এবং ফার্মাসি ইনচার্জ মোঃ কাঁকন মিয়া। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিত ওই ডায়াগনস্টিকের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন সুমন। অথচ তার কোন ডাক্তারি বিদ্যা বা সনদ ছিল না। এভাবে রোগীদের সঙ্গে তিনি প্রতারণা করে আসছিলেন। এছাড়াও হাসপাতালটিতে কোন পরীক্ষা ছাড়াই বিভিন্ন চিকিৎসকের স্বাক্ষর জাল করে নানা ধরনের টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে আসছিলেন। অবশেষে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের জালে ধরা পড়ার পর ভুয়া চিকিৎসক শওকতের ভয়ঙ্কর প্রতারণা ফাঁস হয়ে যায়। র‌্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ বসু জানান, ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন সুমন নিজেকে চিকিৎসক বলে দাবি করেন। তবে তিনি জিজ্ঞাসাবাদে কোন চিকিৎসা সনদ এবং বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি। পরে হাসপাতালের কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে দেখা যায় হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ এক বছর আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে যে সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার চিকিৎসা প্রদান করেন বলে দাবি করা হয়েছে প্রকৃতপক্ষে তাদের কেউই সেখানে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন না। তিনি জানান, হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পরীক্ষা না করেই বিভিন্ন ডাক্তারের স্বাক্ষর জাল করে রিপোর্ট প্রদান, হেলথ কেয়ার হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদও ১ বছর আগে উত্তীর্ণ হয়েছে। হাসপাতালটিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার এবং কার্বনডাইঅক্সাইড সিলিন্ডারকে অবৈধভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডারে পরিবর্তন করে মুমূর্ষু রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছিল। হাসপাতালের ফার্মেসিতে অনুমোদনহীন ভ্যাকসিন, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ, সরকারী ওষুধসহ নিষিদ্ধ যৌন উত্তেষক ওষুধ বিক্রি করা হয়। অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর একটি রুমকে আইসিইউ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল ওই হাসপাতালে। যা রোগীদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক ছিল। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ বসু জানান, নানা অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগে এসএইচএস হেল্থ কেয়ার হসপিটাল এ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক্সের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন সুমনকে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের ল্যাব টেকনোলজিস্ট অসীম মন্ডলকে ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং ফার্মেসি ইনচার্জ মোঃ কাঁকন মিয়াকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
×