ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তিস্তা নদীর বন্যা ও ভাঙ্গন অব্যাহত

প্রকাশিত: ১৪:০০, ২৮ জুন ২০২০

তিস্তা নদীর বন্যা ও ভাঙ্গন অব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ উজানের ঢল ও ভারিবর্ষণে তিস্তা নদীর বন্যা ও ভাঙ্গন পরিস্থিতির কোন উন্নতি ঘটেনি। বন্যা ও নদী ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় তিস্তা নদী অববাহিকার মানুষজন চরম ক্ষতিগ্রস্ত সহ দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। আজ রবিবার সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত দুইদিন ধরে এই পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তিস্তায়। আজ পানির গতি মাত্র ৫ সেন্টিমিটার কমলেও তিস্তার বন্যা ও ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলায় তিস্তা নদীর বন্যা কবলিত হয়েছে ২০ হাজার মানুষ। ভাঙ্গনের মুখে পড়ে বসতঘর ও ভিটা হারিয়েছে ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছচাঁপানী ইউনিয়নের ছাতুনামা ও ভেন্ডাবাড়ি গ্রামের ২২টি পরিবার। এ ছাড়া আরো ৪০ পরিবারের বসত ঘর ভাঙ্গনের মুখে পড়ে বসতঘর নৌকায় করে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় তিস্তা নদীর বন্যা ও ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে জানান ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর চর ও নদীবেষ্টিত গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে এবং বেশ কিছু ঘরবাড়ি নদীর ভাঙ্গনে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারী সহায়তার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপনী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ‘ইউনিয়নের ছাতুনামা ও ভেন্ডাবাড়ি মৌজার ৬ শত পরিবার পানিবন্দি। এরই মধ্যে ২২ টি পরিবারের ঘরবাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। পরিবারগুলোকে নৌকায় করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে শুকনা খাবার ও নগদ দুই হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়েছে।’টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, ‘তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি কারনে ইউনিয়নের পুর্ব খড়িবাড়ি টাপুরচর এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে করা দুই হাজার মিটার বালির বাঁধটির ৫শত মিটার গত বন্যায় বিলীন হয়েছে। এবারের বন্যায় আবারও বাঁধটির ২০০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হলো। ওই গ্রামের প্রায় ৬ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছেন। পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন ভারত থেকে বাংলাদেশে তিস্তা নদীর প্রবেশদ্বার আমার ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বর গ্রামটি পড়েছে। সেখানে একটি ক্রস বাধ থাকলেও তা চাহিদা অনুযায়ী গ্রামবাসীকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে পারছেনা। ফলে ওই গ্রামে ৭০০ পরিবারের ঘরবাড়ি দিয়ে নদীর পানি প্রবাহ হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ১৫ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডালিয়ায় তিস্তা নদীর বিপদসীমা ৫২.৬০ মিটার। পানি প্রবাহ চলছে ৫২.৭৫ মিটার। তিস্তা ব্যারাজের সব কয়টি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রেখে রাখা হয়েছে।
×