ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়;###;মোঃ মনোয়ারুল হক

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রকাশিত: ১২:০৩, ১৯ মার্চ ২০২০

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা

বি.এস.এস,বি-এড (১ম শ্রেণি) সিনিয়র শিক্ষক, কানকিরহাট বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়, সেনবাগ, নোয়াখালী। Email: [email protected] সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা, আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। দ্বাদশ অধ্যায়ঃ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও। স্বল্প শিক্ষিত লতিফ কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকায় এসে স্ত্রীসহ একটি শিল্প কারখানায় কাজ নেন। এ ধরনের কারখানার অধিকাংশ শ্রমিকই নারী। বাংলাদেশে এ শিল্প খাতে প্রায় ৩০ লক্ষের অধিক শ্রমিক কাজ করে। লতিফ ও তার স্ত্রী বর্তমানে সন্তানদের শিক্ষিত ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। ক. আদমজী পাটকল কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়? খ. জীববৈচিত্র্যের ধারণাটি ব্যাখ্যা কর। গ.উদ্দীপকে বাংলাদেশের কোন শিল্প বিবৃত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ.উক্ত শিল্পটি বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কতটুকু ভূমিকা রাখছে? মূল্যায়ন কর। ক.আদমজী পাটকল ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। খ. প্রকৃতির মধ্যে সব ধরনের জীব যে প্রাকৃতিক নিয়মে বেঁচে থাকে সংক্ষেপে তাকেই জীববৈচিত্র্য বলা যায়। মানুষ, প্রাণী ও কীট পতঙ্গ সহ জীবজগৎ প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখেই বেঁচে থাকে। জলবায়ু ও তাপমাত্রার নানা রকম পরিবর্তনের ফলে জীবজগতের বিভিন্ন প্রাণী ও তরুলতার জন্ম বা মৃত্যু ঘটে। প্রকৃতির মধ্যে সকল প্রাণী ও জীব একে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে টিকে আছে। প্রকৃতির এ ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থাই হল জীববৈচিত্র্য। গ.উদ্দীপকে বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্পের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের বৃহত্তম শিল্প হলো এ তৈরী পোশাক শিল্প। বাংলাদেশের রপ্তানী আয়ের সিংহ ভাগই আসে তৈরী পোশাক শিল্প থেকে। আশির দশকে এ শিল্পের পত্তন ঘটলেও বর্তমানে তিন হাজারের বেশি পোশাক শিল্প ইউনিট রয়েছে। এ শিল্পের সাথে জড়িত আছে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক, যাদের অধিকাংশই নারী। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি মানুষের জীবিকা এ পোশাক শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার মতো দেশগুলি বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্পের প্রধান ক্রেতা। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একক বৃহত্তম খাত হিসেবে তৈরী পোশাক শিল্পের অবদান সবচেয়ে বেশী। স্বল্প শিক্ষিত বা অর্ধ শিক্ষিত লতিফ ও তার স্ত্রীর মতো শ্রমিকেরাই এ শিল্পের প্রাণ। ঘ.বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের যোগান কৃষির পক্ষে সম্ভব নয়। শিল্পোন্নয়নই বাংলাদেশের উন্ননের একমাত্র অবলম্বন হতে পারে। শিল্প হিসেবে শ্রম নিবিড় শিল্প সবচেয়ে বেশী উপযোগী ও প্রয়োজনীয়। তাই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শিল্পের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। উদ্দীপকে আলোচিত তৈরী পোশাক শিল্প একটি শ্রম নির্ভর শিল্প। এ শিল্পের উৎপাদন হয় শ্রমিকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে। এখানে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন, যাদের উচ্চতর শিক্ষা প্রশিক্ষণ কিংবা দক্ষতার দরকার হয় না। বাংলাদেশে এরুপ শ্রমিকের প্রাপ্যতা অনেক বেশি। তাই এ শিল্প বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছে। বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি মানুষের জীবিকা এ পোশাক শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট। এ ধরনের শিল্পের অধিকাংশ শ্রমিকই নারী। নূন্যতম যোগ্যতা ও দক্ষতার অধিকারী এসব নারীরা যেখানে অন্য কোনো পেশায় কাজ করার যোগ্যতা রাখেনা বা কাজ পায়না তারা এখানে কাজ করে। ফলে আয় বৃদ্ধি পায়। এরূপ বর্ধিত আয়ের ফলে তাদের জীবন মান উন্নত হচ্ছে। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছে লেখা পড়া করার জন্য। তাদের সন্তানেরা শিক্ষার সুযোগ পাওয়ায় শিক্ষার হার বাড়ছে। তারা একটি চক্র থেকে বেড়িয়ে আসছে। ফলে আর্থসামাজিক উন্নতি ও অগ্রগতিতে এর প্রভাব পড়ছে। সামগ্রিক উন্নয়নে তা গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখছে।
×