ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব রটানোর বিরুদ্ধে মাঠে পুলিশ

প্রকাশিত: ১০:৩০, ১১ জুলাই ২০১৯

 পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব রটানোর বিরুদ্ধে মাঠে পুলিশ

গাফফার খান চৌধুরী ॥ কিছুতেই যেন পিছু ছাড়ছে না গুজব। অতীতে অনেক বিষয় নিয়ে গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে। এবার দেশের বৃহত্তম উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ পদ্মা সেতু নিয়ে রীতিমতো গুজব ছড়ানো হচ্ছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ পরিচালনা করতে মানুষের মাথা লাগবে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে গুজব ছড়ানো হয়েছে। এমন ৩০ ফেসবুক ও ইউটিউব আইডি শনাক্ত করেছে পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি, সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা। এখন পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়া এমন গুজবের কোন সত্যতা মেলেনি। দেশের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে সরকার ও স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীগুলো পরিকল্পিতভাবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এমন গুজব ছড়িয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করতে মানুষের কাটা মাথা লাগবে। এমন গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়ানো হয়। বিষয়টি ইতোমধ্যেই পুলিশের সংশ্লিষ্ট ইউনিটের নজরে এসেছে। সোমবার থেকেই গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। পোস্টটির উৎপত্তি ও যারা ছড়িয়ে বিষয়টিকে ইস্যু বানানোর চেষ্টা করেছে তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাঠে নেমেছে সিআইডির সাইবার ক্রাইম বিভাগ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটসহ অন্য গোয়েন্দা সংস্থা এবং র‌্যাব। পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মোঃ সোহেল রানা জানান, দেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প পদ্মা সেতু। প্রকল্পের সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি জড়িত। এমন উন্নয়নে যারা ঈর্ষান্বিত তারাই পরিকল্পিতভাবে এমন গুজব ছড়িয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এমন গুরুতর অপরাধে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। গুজবের বিষয়ে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার ও সিআইডির মুখপাত্র মোল্যা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় পর আবারও বড় ধরনের গুজব ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। হালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে গুজব ছড়ানো তুলনামূলক কমেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্র, সরকার ও রাষ্ট্রের উন্নয়নকেন্দ্রিক নানা অপপ্রচার, প্রপাগান্ডা ও গুজব ছড়ানোর ঘটনা ঘটেই চলেছে। গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতরা গ্রেফতারও হচ্ছে। তারপরও গুজব ছড়ানো থেমে নেই। গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের অধিকাংশই স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অতীতের নানা আলোচিত গুজবের ঘটনাসহ হালনাগাদ গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত ১১২টি ফেসবুক একাউন্ট শনাক্ত হয়েছে। এসব একাউন্টগুলোর মধ্যে কিছু কিছু অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, লিবিয়া ও সৌদি আরব থেকে পরিচালিত হচ্ছে। বিদেশে বসে গুজব ছড়ানোর সঙ্গে ৬০ জন সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী ব্যক্তি জড়িত বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। তাদের দেশে ফেরত এনে দেশের প্রচলিত আইনে সাজা নিশ্চিত করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। র‌্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান জানান, গুজব রটনাকারীদের শনাক্তে কাজ করে র‌্যাবের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। পুরো বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
×