ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঋণাত্মক হিসাবে কেনাবেচার সুযোগ বাড়ল

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ১৭ আগস্ট ২০১৭

ঋণাত্মক হিসাবে কেনাবেচার সুযোগ বাড়ল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারের ঋণাত্মক মূলধনধারী বিনিয়োগ হিসাবে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। মার্জিন রুলসের সংশ্লিষ্ট ধারা শিথিল করে আবারও সময় বাড়ানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ সাল পর্যন্ত এ হিসাবে লেনদেন করা যাবে। আগামীকাল ১৮ আগস্ট এ হিসাবে লেনদেন করার সুযোগ শেষ হওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে জানা গেছে, আগামী দু-একদিনের এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন করা হবে। এর আগে গত রবিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), ডিএসই ব্রোকারার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রতিনিধিরা এ আবেদন নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমানসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা, ডিবিএ সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী ও বিএমবিএ সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমানসহ তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ডিএসই, ডিবিএ ও বিএমবিএ সবাই মার্জিন রুলসের সংশ্লিষ্ট ধারা শিথিল করে আবারও ১ বছর বাড়তি সময়ের জন্য আবেদন করেছে। তাদের বৈঠকের আলোচনার বিষয়টি কমিশনকে অবহিত করার কথা জানিয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান। বৈঠকের বিষয়ে ডিবিএ সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী বলেন, ঋণাত্মক মূলধনধারী বিনিয়োগ হিসাবে শেয়ার কেনাবেচার আরও ১ বছরের সুযোগ দেয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছি। পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে আমরা এ আবেদন করেছি। এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ সাইফুর রহমান বলেছিলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বদ্ধপরিকর বিএসইসি। বিএসইসির প্রত্যকটি সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে নিয়ে থাকে। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে ডিবিএ ও বিএমবিএর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমরা বসেছিলাম। মার্জিন রুলসের সংশ্লিষ্ট ধারার বিষয়ে আলাপ হয়েছে। এটি আমি কমিশনকে জানিয়েছি। আশা করছি কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবে। উল্লেখ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩(৫) ধারা অনুযায়ী কোন বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ওই হিসাবে শেয়ার কেনাবেচা বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু ২০১০ সালের ধস পরবর্তী বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় কয়েক দফা ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নতুন করে স্থগিতাদেশের জন্য বিএসইসির কাছে আবেদন করে। উল্লেখ্য, মার্জিন ঋণ হচ্ছে বিশেষ ধরনের ঋণ সুবিধা। শেয়ার কেনার জন্য ব্রোকার হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক গ্রাহককে এই ঋণ দিয়ে থাকে। বিএসইসি প্রণীত মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর আওতায় এই ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে যে সময়টি বিএসইসি বাড়িয়েছে তা শুধু ব্রোকার হাউসের জন্য প্রযোজ্য। অন্যদিকে মার্চেন্ট ব্যাংকের গ্রাহকরা সবসময় নেগেটিভ ইক্যুইটির হিসাবে লেনদেন করতে পারেন। সময় বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের সঙ্গে মার্চেন্ট ব্যাংকের কোন সম্পর্ক নেই। ২০১০ সালের পর থেকে টানা দর পতনে অসংখ্য মার্জিন এ্যাকাউন্টে বিনিয়োগকারীর মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। ওই সব এ্যাকাউন্টে থাকা শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম এমন জায়গায় নেমে আসে যে, অনেক ক্ষেত্রে তা বিনিয়োগকারীর নিজস্ব মূলধনের পরিমাণ কমে যায়। আইন অনুসারে এমন এ্যাকাউন্টে লেনদেন নিষিদ্ধ।
×