ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফের ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিন পরীক্ষা

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২৯ মার্চ ২০১৭

ফের ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিন পরীক্ষা

উত্তর কোরিয়া শুক্রবার আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিনের পরীক্ষা চালিয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তা সোমবার সিএনএনকে একথা বলেছেন। গত কয়েক সপ্তাহে একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি উত্তর কোরিয়ার তৃতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিন পরীক্ষার ঘটনা। আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে (আইসিবিএম) এই ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। খবর সিএনএন। উত্তর কোরিয়ার হাতে আইসিবিএম থাকার অর্থ সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি। আন্তঃমহাদেশীয় বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি কঠিন বিষয় এবং এর জন্য রকেট ইঞ্জিন অপরিহার্য। আইসিবিএমে ব্যবহারের উপযোগী সূক্ষ্ম ও ছোট ওয়ারহেড তৈরি করতে উত্তর কোরিয়া সক্ষম হয়েছে কি না, যুক্তরাষ্ট্র এখনও তা নিশ্চিত নয়। তবে উত্তর কোরিয়ার দাবি, তারা এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি বিশেষ করে আইসিবিএমে ব্যবহারযোগ্য রকেট তৈরি করেছে। তবে এ দাবির যথার্থতা খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার আরেক ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া মহড়ায় অংশ নেয়ার জন্য তারা দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথমবারের মতো এফ-৩৫ মোতায়েন করেছে। এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া আগামী মাসে ষষ্ঠ পরমাণু পরীক্ষা চালাতে পারে বলে জল্পনা চলছে। দেশটির প্রধান পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্র পুঙ্গিরইতে বিশাল খনন কাজকে ঘিরে এসব জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তির বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া প্রধান পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্রের দুটি সুড়ঙ্গে খনন কাজ অব্যাহত রেখেছে এবং এতে কূটনৈতিক মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। খনন কাজ শেষ হওয়ার পর দুটোতেই এক সঙ্গে পরমাণু পরীক্ষা চালানো হবে নাকি স্বল্প বিরতি দিয়ে আলাদা আলাদা পরীক্ষা চালানো হবে তা বের করতে অনেক হিসাব করতে হবে বলে এ সূত্র দাবি করেছে। এছাড়া, কি ধরণের পরমাণু উপাদান ব্যবহার করা হবে তাও নির্ধারণ করা যায়নি। আগামী মাসে পরমাণু পরীক্ষা চালানোর তিনটি সম্ভাব্য তারিখের কথা এ সূত্র থেকে বলা হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম দিকে চীন-মার্কিন শীর্ষ সম্মেলনের সময়ে এ পরমাণু পরীক্ষা হতে পারে। কিংবা উত্তর কোরিয়ার সাবেক নেতা কিম ইল-সুংয়ের জন্মদিন ১৫ এপ্রিল অথবা কোরীয় গণফৌজের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ২৫ এপ্রিল এ পরীক্ষা চালানো হতে পারে। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত দেড় বছরে উত্তর কোরিয়া ২৫ দফা ক্ষেপণাস্ত্র এবং দুই দফা পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছে। দেশটির দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রে পরমাণু বোমা বসানোর পরীক্ষার অংশ হিসেবে এগুলো চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইসিবিএমের মতো ক্ষেপণাস্ত্রে পরমাণু অস্ত্র বহনের সক্ষমতা উত্তর কোরিয়া অর্জন করেছে কি না তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য নিশ্চিত নয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সোমবার পৃথকভাবে জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া যৌথ সামরিক মহড়ায় এফ-৩৫বি স্টেলথ বিমান ব্যবহার করা হবে। দ্রুত উড্ডয়ন ও খাড়া অবতরণে সক্ষম জঙ্গী বিমানগুলো দু’বছর ধরে মার্কিন সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত হচ্ছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন জেফ ডেভিস সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসন থেকে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানকে রক্ষা করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ এর আগে এ মাসের ১৯ তারিখ উত্তর কোরিয়ার রকেট ইঞ্জিনের পরীক্ষা চালানোর খবর প্রথম পাওয়া যায়। দেশটির নেতা কিম জং-উন একে তাদের রকেট শিল্পের নবজন্ম বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি দাবি করেন এর মধ্য দিয়ে তার দেশ বিশ্বমানের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সক্ষমতা অর্জন করেছে। এছাড়া অচিরেই তারা আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে যাচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন। এখন এক মাসের মধ্যে রকেট ইঞ্জিনের ধারাবাহিক পরীক্ষা তার সেই ঘোষণা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
×