ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নোট বাতিল ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গে চলছে হরতাল

প্রকাশিত: ১৯:৪৩, ২৮ নভেম্বর ২০১৬

নোট বাতিল ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গে চলছে হরতাল

অনলাইন ডেস্ক॥ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আজ সোমবার ভারতজুড়ে প্রতিবাদ করছে বিরোধী দলগুলি। গত ৮ নভেম্বর মধ্য রাত থেকে নোট বাতিলের ঘোষনার পর থেকে সংসদ হোক কিংবা সংসদের বাইরে প্রতিটি জায়গায় বিরোধীরা সক্সঘবদ্ধ ভাবে প্রতিবাদে সরব হলেও সোমবারের প্রতিবাদি কর্মসূচী নিয়ে বিরোধীদের মধ্যে মতভেদ দেখা গেছে। কংগ্রেস, তৃণমূল, আম আদমি পার্টি (আপ) জানিয়ে দিয়েছে তারা হরতালের পক্ষে নয়। সংসদ ও রাস্তায় তারা এই ইস্যুতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দেখাবে। সেইমতো এদিন বিজেপি বিরোধী দলগুলি গোটা দেশে ‘জন আক্রোশ দিবস’ পালন করছে। এদিকে, মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিরোধিতার সুর আরও তীব্রতর করতে এদিন কেরল, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গে ১২ ঘণ্টার (সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা) হরতালের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। অন্যদিকে জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) সোমবারের আক্রোশ দিবস কিংবা আগামী ৩০ নভেম্বর পাটনাতে তৃণমূলের বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিচ্ছে না। কারণ মোদির নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে একমাত্র বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারই সমর্থন জানিয়েছে। জেডিইউ’এর বিহারের সভাপতি বৈশিষ্ঠ নারায়ন সিং জানিয়েছেন ‘আমরা কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। সেখানে আমরা কিভাবে এই বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশ নেব?’ আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচী থেকে দূরে থাকছে কেন্দ্রে এনডিএ সরকারের শরিক দল শিবসেনাও। তারাও কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে, যদিও সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হওয়াতে কিছুটা অখুশি। এদিকে বামশাসিত কেরল ও ত্রিপুরায় হরতালে সাড়া পাওয়া গেছে। রাজ্যের বাজার, স্কুল-কলেজ বন্ধ, রাস্তায় বেসরকারি যানবাহনের সংখ্যাও কম। তবে পশ্চিমবঙ্গে বামেদের ডাকা হরতালের কোন প্রভাবই পড়েনি। রাজ্যটির শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রথম দিন থেকেই এই হরতালের বিরোধিতা করে আসছে। এদিন রাজ্যের জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে রাজ্য সরকারের তরফে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বাজার-ঘাট, দোকান, বাস, ট্রেন, বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে। সল্টলেকে আইটি সেক্টরেও হরতালের কোন প্রভাব পড়েনি। ব্যারাকপুর, আসানসোল, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে অন্য দিনের মতোই কাজ কর্ম চলছে। নবান্নেও সরকারি কর্মচারীদের উপস্থিতির হার স্বাভাবিক রয়েছে। এদিন বেলা ১২টা থেকে কলকাতার কলেজ স্কোয়ার থেকে এক প্রতিবাদি মিছিল শুরু হয়ে তা শেষ হবে ধর্মতলার ডরিনা ক্রসিং-এ। এই মিছিলেন অংশ নেবেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি থেকে শুরু করে দলের প্রথম সারির নেতা, সাংসদ, বিধায়ক, রাজ্যের মন্ত্রীরা। দেশটির রাজধানী দিল্লিতে অন্যান্য দিনের মতোই যানবাহন স্বাভাবিক রয়েছে, খোলা রয়েছে সমস্ত ব্যাবসায়িক ও শিল্প প্রতিষ্ঠান। দিল্লির খান মার্কেট অ্যাসোশিয়েশন’এর সভাপতি সঞ্জীব মেহরা জানিয়েছে কোন রাজনৈতিক দলের তরফে আমাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা বলা হয়নি। বিহারেও সিপিআইএম’এর কর্মী-সমর্থকরা বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভের ফলে গয়া-পাটনা বিভাগে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। একাধিক জায়গায় দোকানদারকে জোর করে তাদের ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ রাখতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদে বাতিল নোট পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায় সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-এর সমর্থকরা। বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রেও অন্যান দিনের মতো স্বাভাবিক রয়েছে। সেখানকার বিরোধী দলগুলি কোন হরতাল পালন করছে না। তবে ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) জেলাগুলিতে প্রতিবাদি মিছিলের ডাক দিয়েছে। ওড়িষ্যাতেও বাম শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ (সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নস)-এর ডাকে পুরীতে একটি প্রতিবাদী সভার আয়োজন করেছে। তামিলনাড়ুতেও বিরোধী ডিএমকে-এর সমর্থকরা চেন্নাইসহ একাধিক জায়গায় প্রতিবাদী মিছিল বের করে।
×