ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাউফলে উপবৃত্তির টাকা বিতরণে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ২১ জুলাই ২০১৬

বাউফলে উপবৃত্তির টাকা বিতরণে অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ২০ জুলাই ॥ বাউফলে প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কার্ডের পরিবর্তে ৩০ টাকার বিশেষ সিøপের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা বিতরণের চেষ্টা করা হয়েছে। সরেজমিনে বুধবার বেলা ১১টা দাশপাড়া ইউনিয়নের উত্তর দাশপাড়া সরকারী প্রাইমারী স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ওই স্কুল ছাড়াও এই কেন্দ্র থেকে বাহির দাশপাড়া, উত্তর পূর্ব দাশপাড়া আমিনা খাতুন, দাশপাড়া খেজুর বাড়িয়া সংলগ্ন প্রাইমারী স্কুলসহ মোট ৫টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা প্রদান করা হচ্ছিল। এ সময় বিতরণকারী ব্যাংক কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে খেজুরবাড়িয়া প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমের কাছে প্রত্যয়নপত্র এবং বিতরণের তালিকা চাইলে ওই প্রধান শিক্ষক দেই বলে, সটকে পড়েন। পরে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক দিলীপ কুমার এসে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে ৪ কিস্তির মধ্যে ২ কিস্তির বিতরণের শিট জমা দেন। ব্যাংক কর্মকর্তা পুরো চার কিস্তির বিতরণ শিট চাইলে ওই শিক্ষক দুইটি শিটের ফটোকপির ওপর ওভার রাইটিং করে আরও দুইটি শিট নিয়ে আসেন। এরপর বিতরণকারী ব্যাংক কর্মকর্তা সিরিয়াল অনুযায়ী নাম ডাকা শুরু করলে দেখা যায় অনেকই অনুপস্থিত। এরপর ব্যাংক কর্মকর্তা শিট অনুযায়ী উপস্থিত অভিভাবকদের কাছে কার্ড চাইলে তাঁরা কার্ডের পরিবর্তে একটি করে স্লিপ দেখান। যাতে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক দিলীপ কুমারের স্বাক্ষর করা রয়েছে। এ সময়ে অভিভাবকরা জানান কার্ড না দিয়ে তাদের স্কুল থেকে এই স্লিপ দেয়া হয়েছে এবং স্লিপ প্রতি তাঁদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা করে। এরপর ব্যাংক কর্মকর্তা শিক্ষক দিলীপ কুমারকে বিতরণ কার্ড কোথায় জানতে চাইলে তিনি একটি ব্যাগের ভেতর থেকে সব বিতরণ কার্ড বের করেন। বিতরণ কার্ড বের করলে সেখানে দেখা যায় কার্ডে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকের যৌথ ছবি নেই। এমনকি অভিভাবকদের স্বাক্ষর পর্যন্ত নেই। সেখানে স্বাক্ষর রয়েছে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার। কিভাবে এই অনিয়ম সম্ভব জানতে চাইলে ওই সহকারী শিক্ষক বলেন, তিনি কিছুই জানেন না। ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নিজাম উদ্দিন জানান, উপবৃত্তি তালিকায় ২৮০ শিক্ষার্থীর নাম থাকলেও স্কুলের সর্বোচ্চ শিক্ষার্থী রয়েছে ১০০ জন। বাকি যে শিক্ষার্থীদের নাম দেয়া হয়েছে তার সবটাই ভুয়া। দীর্ঘদিন থেকে হেড মাস্টার রেজাউল করিম, দিলিপ মাস্টার আর শিক্ষা অফিস মিলে এই উপবৃত্তির টাকা ভাগভাটোয়ারা করে খেয়ে আসছিল। এ বিষয়ে ওই ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার মাইনুল ইসলাম বলেন, তিনি অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের ছবি নেই এমন কোন কার্ডে স্বাক্ষর করেননি। যদি কোন কার্ডে এমন স্বাক্ষর থেকে থাকে, তবে সেই স্বাক্ষর তাঁর নয়। সেগুলো জাল স্বাক্ষর এবং কেউ যদি তাঁর স্বাক্ষর জাল করে থাকে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার রঙ্গলাল রায় বলেন, আমি নিজে স্বাক্ষর করিনি। ফেক্সিবেল মারতে বলছি, যদি কোন শিক্ষক কিংবা কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×