ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২

তিস্তার গতিপথ পাল্টে যাচ্ছে, সাতটি চরের অস্তিত্ব বিলীন প্রায়

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৪ জুলাই ২০১৬

তিস্তার গতিপথ পাল্টে যাচ্ছে, সাতটি চরের অস্তিত্ব বিলীন প্রায়

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী ॥ ফসলের মাঠ, পুকুরে মাছ, বসতভিটা, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার সব কিছু একে একে বিলীন হয়ে যেতে শুরু করেছে। তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তনে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার জনবসতিপূর্ণ ৭টি চরের অস্তিত্ব প্রায় শূন্যের কোঠায় এসে দাঁড়িয়ে পড়ছে। ওই ৭ চরের উপর দিয়েই তিস্তা নদী প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার রাক্ষসী রূপ ওই সব চরের পরিবারগুলোকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে। গত কয়েক দিনের উজানের ঢলে তিস্তা নদী তার মূল গতিপথ পরিবর্তন করে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ি মৌজার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। যা বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। চরগ্রামগুলো হলো টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ৪ ওয়াডের ৭টি গ্রাম যথাক্রমে চরখড়িবাড়ি, পূর্ব খড়িবাড়ি, টাপুরচর, ঝিঞ্জিরপাড়া, পুরাত টাপুরচর, মেহেরটারী ও খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের ইউনুছের চর। এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তনে কোন এক সময় তিস্তা ব্যারাজের কার্যক্রমের অস্তিত্ব আদৌ থাকবে কিনা। এদিকে নদীভাঙ্গনে ইউনুছের চরের ৪২টি পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ওই চরের মানুষজন ঘরের চালা ভেঙ্গে নিরাপদে সরে এসেছে। ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে তিস্তা নদীবেষ্টিত খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের পূর্ব বাইশপুকুর চরের ভেতরের ইউনুছের চর। নদীঘেরা এই চরের পরিবারগুলো চরের জমিতে ফসল আবাদ ও তিস্তায় মাছ শিকার করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করত। চরের মন্টু কাজী ও সাহের উদ্দীন বললেন, আমরা এখন তিস্তা নদীর রোষানলে পড়ে পথের মানুষের পরিণত হচ্ছি। অপর চরবাসী নহর উদ্দীন জানান, এক খ- জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। তিনি বলেন, বানের পানিতে ডুবে থাকায় তাও পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া তার ওই বাদাম ক্ষেতের জমিটি গ্রাস করেছে তিস্তা। এদিকে একই অবস্থা ডালিয়া ব্যারাজের উজানের টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ৬টি চর গ্রামের। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ৬ গ্রামের উপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানে চরখড়িবাড়ি বিজিবির বিওপি ক্যাম্পটির ভেতর তিস্তার পানি প্রবেশ করছে। এই চরের বাসিন্দা সাধু ও গোলাম মোস্তফা জানান, ৬টি চরের ভেতর দিয়ে তিস্তা নদী গতিপথ পরিবর্তন করে চলায় বসতভিটা, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, স্কুল, ব্রিজ সব ভেসে যাচ্ছে। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে জীবন রক্ষা করছে কয়েক হাজার মানুষ।
×