ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সুমন্ত গুপ্ত

ব্রেক্সিট ॥ সঙ্কটের আবর্তে যুক্তরাজ্য

প্রকাশিত: ০৭:৩১, ২৯ জুন ২০১৬

ব্রেক্সিট ॥ সঙ্কটের আবর্তে যুক্তরাজ্য

গত শতাব্দীর শেষ তিন দশকে ইউরোপীয় দেশগুলো সম্মিলিত মহাদেশব্যাপী একটা রাষ্ট্রীয় ইউনিয়ন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তারই ফলে হলো রোম ডিক্লারেশন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্ম হয় রোম ডিক্লারেশনের মধ্য দিয়ে। ইউরোপীয় এই জোটটি বেশ পূর্বে গঠিত হলেও ব্রিটেন এতে যোগদান করে ১৯৭৩ সালে। তখন রক্ষণশীল দল ক্ষমতায়। স্যার এ্যাডওয়ার্ড হিথ প্রধানমন্ত্রী কিন্তু সময়ের ধারাবাহিকতায় ব্রিটিশ বামপন্থীদের একটা বড় অংশ মনে করে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি পুঁজিবাদী স্বৈরতান্ত্রিক জোট। ইইউকে কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব চর্চার এক ভয়াবহ প্রতিষ্ঠান হিসেবেই দেখলেন তারা। ইউরোপীয় জোটে অবস্থান প্রশ্নে চার দশকের ব্যবধানে ব্রিটিশদের দৃষ্টিভঙ্গি যে পাল্টেছে, তার প্রমাণটা হাতেনাতেই পাওয়া গেল ২৩ জুন এর গণভোটে । ৪১ বছর আগে যেখানে জোটবদ্ধ থাকার পক্ষে ৬৭ শতাংশ ব্রিটিশের ভোট পড়েছিল, এবার সেখানে জোট ছাড়ার পক্ষে ভোট পড়ে প্রায় ৫২ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে কনজারভেটিভ সরকারের আমলে ব্রিটেন ইইউতে (তৎকালীন ইইসি) প্রবেশ করে। এর দুই বছরের মাথায় দেশটিতে ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোট হয়। তাতে ৬৭ শতাংশ ব্রিটিশ ইইসির পক্ষে ভোট দেয়। ১৯৭৫ সালের পর গত বৃহস্পতিবার সেই একই বিষয়ে গণভোট হয়। বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ৪ কোটি ৬৫ লাখ ভোটারের ৭২.২% এই গণভোটে নিজেদের মত দিয়েছেন। ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট পড়েছে ৫১.৯%, ইইউতে থাকার পক্ষে ভোট পড়েছে ৪৮.১%। যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় জোট থেকে বের করার লক্ষ্যে ডানপন্থী রাজনীতিবিদরা ১৯৯১ সালে ইউকে ইনডিপেনডেন্স পার্টি গঠন করেন। নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বে ২০১৩ সালে তারা জনপ্রতিনিধিত্ব বিবেচনায় যুক্তরাজ্যের চতুর্থ শক্তিশালী দলে পরিণত হয়। কনজারভেটিভ সমর্থকদের অনেকেই তখন থেকে ইনডিপেনডেন্স পার্টির দিকে ঝুঁকতে থাকে। রাজনীতিকদের দল বদলের ঘটনাও ঘটে। পরিবর্তন আসে ভোটারদের মনোভাবেও। গণভোটের রায় ব্রেক্সিটের পক্ষে যাওয়ার পর যুক্তরাজ্যের প্রতি নিরপেক্ষ মন্তব্য কিংবা শোক দুটিই হয়েছে। আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে এসেছে যুক্ত বিবৃতি। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ জাংকার, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট মার্টিন শুলজ ও ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট গতকাল শুক্রবার যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা এখন আশা করছি, যুক্তরাজ্য সরকার যত দ্রুত সম্ভব, ব্রিটিশ জনতার এই রায় বাস্তবায়ন করবে, সেই প্রক্রিয়া যত বেদনাদায়কই হোক না কেন। আমরা ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যকে ইইউয়ের ঘনিষ্ঠ অংশীদার হিসেবে আশা করছি।’ বিশ্বের অন্যতম সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইইউয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্য ভবিষ্যত সম্পর্ক নির্ধারণ করে ফেললেও ন্যাটোতে এর অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে।’ ব্রিটিশ জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ইইউয়ের সঙ্গে ‘অপরিহার্য অংশীদারি’ বজায় থাকবে এবং অটুট থাকবে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ‘বিশেষ বন্ধন’। জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঙ্গেলা মার্কেল গণভোটের ফলাফলে ‘গভীর দুঃখ’ প্রকাশ করে বলেন, ‘ইউরোপ ও ইউরোপীয় ঐক্যের ওপর এটা একটা ধাক্কা, তাতে সন্দেহ নেই।’ ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রঁাঁসোয়া ওঁলাদ বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্তে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। কিন্তু সিদ্ধান্তটা তাদের এবং সেটাকে আমাদের সম্মান জানাতে হবে।’ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেন, ‘ইইউ ত্যাগ করার কারণে রাশিয়ার সঙ্গে ব্রিটেনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলেই আশা করছি।’ ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো জেন্তিলোনি ও সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্তেফান লোফহেন উভয়ই ব্রিটিশ ভোটারদের এ সিদ্ধান্তকে ‘নবজাগরণের ডাক’ আখ্যা দেন। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী এ্যালেক্সিস সিপ্রাস ব্রিটিশদের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘ব্রেক্সিট হয় একটা নবজাগরণের ডাক হয়ে উঠবে অথবা ইউরোপীয় জনগণের জন্য একটা বিপজ্জনক পথের শুরু হয়ে দাঁড়াবে।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক অবসানের পক্ষে ব্রিটিশ জনগণের রায়ের প্রভাব পড়েছে ইইউ-জোটভুক্ত অন্যান্য দেশেও। ‘লিভ’ পক্ষে রায় আসায় নড়েচড়ে উঠেছে জোটের অন্য সদস্য দেশগুলো। তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। এরইমধ্যে উগ্র জাতীয়তাবাদীরা নিজ নিজ দেশে একই রকমের গণভোট আয়োজনের দাবি তুলেছেন। কেউ কেউ একে স্বাধীনতা বললেও কেউ কেউ আবার বলছেন, এটি ব্রিটিশ জনগণের ভুল সিদ্ধান্ত। অনেকে আবার মনে করছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যেন বাকি সদস্য দেশগুলো বিচ্ছিন্ন না হয়ে যায় তার জন্য ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। সবমিলে ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় ইউনিয়নে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক গবেষণা প্রতিবেদনেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদের মধ্যকার অস্থিরতার আভাস দেয়া হয় গণভোটের আগেই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়ার রায়কে স্বাগত জানিয়ে ফ্রান্সের ফ্রন্ট ন্যাশনাল দলের নেতা ম্যারিন লা পেন একটি টুইট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘স্বাধীনতার জন্য জয় হলো। যেমনটা আমি কয়েক বছর ধরে চাইছি। এখন ফ্রান্সে ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলোতে একইরকম করে গণভোট হওয়া প্রয়োজন।’ ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থী রাজনীতিবিদ ম্যারিয়ন মারেচাল লা পেন টুইটারে লিখেছেন, ‘ফ্রম ব্রেক্সিট টু ফ্রেক্সিট। আমাদের দেশে গণতন্ত্র নিয়ে আসার এখনই সময়। ফরাসীদেরও একই রকম করে নিজেদের মতামত জানানোর অধিকার থাকতে হবে।’ নেদারল্যান্ডসের ফ্রিডম পার্টির নেতা গির্ট উইল্ডার্স উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘ব্রিটিশদের জন্য হুররে! এবার আমাদের পালা। এবার ডাচ গণভোটের পালা।’ ফিনল্যান্ডের ইইউবিরোধী দলের নেতা টিমো সোইনি বলেন ‘জাতি তার রায় দিয়ে দিয়েছে। এ গণভোটের পর যুক্তরাজ্য আর ইইউ-এর মধ্যে পরবর্তী আলোচনার ব্যাপারে কথা হওয়া প্রয়োজন।’ সম্প্রতি পিউ সেন্টারের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যাপারে এককভাবে ব্রিটিশ নাগরিকরাই প্রশ্ন তোলেননি। জোটের অন্তর্ভুক্ত অন্য দেশগুলোর মধ্যেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রশ্নে বিরোধিতা বাড়ছে কিংবা বলা চলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জনপ্রিয়তা কমছে। ‘ইউরোস্কেপটিসিজম বিয়ন্ড ব্রেক্সিট’ নামের ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক বছর ধরে ইউরোপের দেশগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাবমূর্তির উত্থান-পতন হচ্ছে। ২০১২ ও ২০১৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতিতে ধস নামার পর ব্রাসেলসভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটির জনপ্রিয়তা কমেছে। বর্তমান সময়ে আবারও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জনপ্রিয়তা নেমে এসেছে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ছয়টি দেশের নাগরিকদের ওপর চালানো জরিপে দেখা গেছে ৫টি দেশে ইইউ-এর জনপ্রিয়তা কমেছে। ফ্রান্সে ১৭ শতাংশ, স্পেনে ১৬ শতাংশ, জার্মানিতে ৮ শতাংশ যুক্তরাজ্যে ৭ শতাংশ এবং ইতালিতে ৬ শতাশ জনপ্রিয়তা কমেছে। ফ্রান্সের ৩৮ শতাংশ মানুষ ইইউকে সমর্থন করেন। আর যুক্তরাজ্যে ইইউকে সমর্থন করেন ৪৪ শতাংশ মানুষ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে গণভোটে রায় আসায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার ভোটের ফল প্রকাশের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় লন্ডনের ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে স্ত্রী সামান্থাকে পাশে রেখে এ ঘোষণা দেন ডেভিড ক্যামেরন। তিনি বলেন, জনগণের নতুন নির্দেশনার আলোকে দেশকে এগিয়ে নিতে পরিচালকের ভূমিকা পালন করা তার জন্য সঙ্গত নয়। ক্যামেরন বলেন, আমি এই দেশকে ভালবাসি এবং এ জন্য যা কিছু করণীয়, তার সব কিছুই আমি করব। ইইউ ছাড়ার পক্ষে গণভোটে রায় আসার ব্যাপারে তিনি বলেন, ব্রিটিশ জনগণের ইচ্ছা এমন এক নির্দেশ, যা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। ক্যামেরন জানান, আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কনজারভেটিভ পার্টির কনফারেন্সে দলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে। এ সময় পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করে যাবেন। ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটেনের জনগণের রায় স্পষ্ট হওয়ার পরপরই যুক্তরাজ্যে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ব্রিটেন থেকে বেরিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থেকে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে উত্তর আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড। ইইউতে থাকা-না থাকা নিয়ে গণভোটে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডের বাসিন্দারা ভোট দিয়েছেন। কারণ এ চার রাজ্য নিয়েই গঠিত যুক্তরাজ্য বা গ্রেট ব্রিটেন। এদিকে ইইউতে থেকে যাওয়ার জন্য লন্ডনকে স্বাধীন নগররাষ্ট্র ঘোষণা করতে মেয়র সাদিক খানের কাছে গণস্বাক্ষর সংবলিত একটি পিটিশন দাখিল করেছেন শহরটির বাসিন্দারা। ব্রেক্সিট ইস্যুতে উত্তর আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের ভোটাররাই বিপুল হারে ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। স্কটিশ ও আইরিশদের অভিযোগ, তারা বেশিরভাগ ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিলেও উল্টো ভোট দিয়েছেন ইংল্যান্ডবাসী। ফলে ফলাফলের পর ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এ দুটি দেশে। ইইউতে থাকলেই স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড সুরক্ষিত থাকবে বলে মনে করছেন অনেকেই। আয়ারল্যান্ডের রাজনৈতিক দল সিন ফেইন জানিয়েছে, দেশটির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে কথা বলার অধিকার হারিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। অন্যদিকে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির নেত্রী নিকোলা স্টার্জন জানিয়েছেন, স্কটল্যান্ড ইইউতে থাকতে চেয়েই ভোট দিয়েছে। কারণ স্কটল্যান্ডের ভবিষ্যত ইইউতেই নিহিত। ভোটের ফল থেকেই স্পষ্ট ঠিক কী চাইছে স্কটল্যান্ডের মানুষ। কারণ ইউনিয়নে থাকতে চেয়ে সবচেয়ে বেশি ভোট স্কটল্যান্ডের মানুষই দিয়েছে। পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডও ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষেই বেশি করে ঝুঁকছে বলে ফলে উঠে এসেছে। গণভোটের আগে নিকোলা বলেছিলেন, স্কটল্যান্ডের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে যদি যুক্তরাজ্য ইইউ ছেড়ে চলে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়, তবে স্বাধীনতার দাবিতে দ্বিতীয় গণভোট ঠেকানো অসম্ভব হয়ে উঠবে। এর আগে ২০১৪ সালে স্বাধীনতার প্রশ্নে স্কটল্যান্ডে গণভোট হয়েছিল। সেবার অবশ্য ভোটাররা ব্রিটেনে থাকার পক্ষেই ভোট দিয়েছেন বেশি। এবার আবারও ব্রিটেন ছেড়ে যাওয়ার কানাঘোষা চলছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়ার ব্যাপারে তুরস্কেও গণভোট হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। দীর্ঘদিন ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) তুরস্কের সদস্যপদের বিষয়টি ঝুলে থাকার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। আঙ্কারার ব্যাপারে ইইউর মনোভাবেরও কঠোর সমালোচনা করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। বুধবার ইস্তানবুলে এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে কথা বলেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, আমরা ব্রিটেনের মতো জনগণের ওপর বিষয়টি ছেড়ে দিতে পারি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়ার ব্যাপারে আমরা আলোচনা অব্যাহত রাখবো না এখানেই ইতি টানবো তা গণভোটের মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকে জানতে পারি। এক্ষেত্রে জনগণ যদি বলে আলোচনা ‘অব্যাহত থাকুক’ তাহলে আমরা তা চালিয়ে যাব। রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, তুরস্ক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন সদস্য হিসেবে আমাদের মেনে নিতে চায় না। আমরা এটা জানতাম। কিন্তু আমরা আমাদের আন্তরিকতা দেখানোর চেষ্টা করেছি। এরদোয়ান বলেন, তুরস্ককে ১৯৬৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। দীর্ঘ ৫৩ বছর পার হলেও তা এখনও হয়নি। এদিকে ব্রেক্সিট প্রশ্নে অনুষ্ঠিত গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পক্ষে রায় আসবার আভাস পাওয়ার পর থেকেই নাটকীয়ভাবে কমে গিয়েছে পাউন্ডের মূল্যমান।
×