ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুঠোফোনে কথা বলার ওপর সারচার্জ তুলে দিতে অর্থমন্ত্রীকে তারানার চিঠি

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৬ জুন ২০১৬

মুঠোফোনে কথা বলার ওপর সারচার্জ তুলে দিতে অর্থমন্ত্রীকে তারানার চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্রাহকের হাতে থাকা ১৩ কোটি ২০ লাখের বেশি সিমের মধ্যে ৩১ মে রাত বারোটা পর্যন্ত ১১ কোটি ২১ লাখ সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হয়েছে। বেঁধে দেয়া সময়সীমার পরও নিয়ম মেনে ৪ জুন পর্যন্ত সিম পুনঃনিবন্ধন হয়েছে আরও ৩৮ লাখের মতো। এতে মোট ১১ কোটি ৬০ লাখের মতো সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হয়েছে। সরকারের টার্গেটের চেয়ে বেশিই সিম পুনঃনিবন্ধন করেছে গ্রাহকরা। মোবাইল ফোনে কথা বলার ওপর বসানো সারচার্জ তুলে দেয়ার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি অর্থমন্ত্রীকে দেয়া হয়েছে। রবিবার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম নিবন্ধন বিষয়ে অপারেটর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। অবশ্য বিটিআরসি জানিয়েছিল, ৩১ মে রাত বারোটা পর্যন্ত ১০ কোটি ৮১ লাখ ৮ হাজার ১৩৮ সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হয়েছে। প্রতিমন্ত্রীর দেয়া হিসাব অনুযায়ী, নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা আরও ৪০ লাখ বেশি। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একেবারে তাৎক্ষণিক ইনফরমেশন ছিল সেটা। কারণ আমরা বলেছিলাম জিরো আওয়ার থেকে। বারোটা বাজার এক মিনিট আগেও নিবন্ধিত হয়েছে, শেষের দিকে প্রতি সেকেন্ডে ১২৬ সিম নিবন্ধন হয়েছে। প্রকৃত হিসাবে জানতে তাই এক দুই দিন লেগেছে। যারা ওই সময়ে সিম নিবন্ধন করেননি তাদের সিম বন্ধ করে দেয়া হলেও ৫৪০ দিনের মধ্যে সিমটি চালু করতে পারবেন। তবে সেজন্যও বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হবে এবং টাকা দিয়ে নতুন করে কিনে নিতে হবে সিমটি। অবশ্য অপারেটররা ৪ জুন পর্যন্ত বিনা পয়সায় সিম নিবন্ধনের সুযোগ করে দিয়েছিলেন গ্রাহকদের। ওই নিয়ম মেনে আরও ৩৮ লাখের বেশি সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হয়েছে। নিবন্ধন না করায় এক কোটি ৬০ লাখের মতো সিম এখন নিষ্ক্রিয় রয়েছে। তবে দেশের ছয়টি অপারেটরের ঠিক কত সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হয়েছে। এই হিসাব পেতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে। প্রতিটি এনআইডির বিপরীতে কতটি সিম রয়েছে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে গ্রাহকদের তা জানিয়ে দেয়া হবে। কষ্ট করে সিম পুনঃনিবন্ধন করায় জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, যদি সম্ভব হতো তাহলে প্রতিটি নাগরিকের কাছে গিয়ে ধন্যবাদ জানাতাম। এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপারেটর, এনআইডি কর্তৃপক্ষ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সবাইকেও ধন্যবাদ দেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাজেট ঘোষণার আগেই মোবাইল ফোনে কথা বলার ওপর কোন কর বা সারচার্জ আরোপ না করার জন্য আমি অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমি অনুরোধ করেছিলাম, এ শিল্পটাকে বেড়ে উঠতে দেই। চিঠিটি আমি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। বাজেট বক্তৃতায় তার প্রতিফলনটা পাইনি। এ বিষয়ে আমি আরেকটি চিঠি ড্রাফট (খসড়া) করেছি, এটা আমি সই করে আজই রবিবারের মধ্যে অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেব। অনুরোধ করেছি আমাদের মোবাইলে কথা বলার ওপর যদি এ হারে সারচার্জ আরোপ করা হয় তাহলে ইন্ডাস্ট্রিটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উল্লেখ্য উপস্থাপিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী মোবাইল ফোন সেবার ওপর শুল্ক হার পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করেন। মোবাইল সিম বা রিম কার্ডের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার ওপর বিদ্যমান তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করে পাঁচ শতাংশ নির্ধারণ করেন অর্থমন্ত্রী। বাজেট প্রস্তাবের রাত থেকেই অপারেটররা বর্ধিত টাকা কেটে নিচ্ছে গ্রাহকদের কাছে থেকে। ভয়েস কল, এসএমএস এবং ডাটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কাছে অতিরিক্ত অর্থ কেটে নেয়া হচ্ছে।
×