
ছবি: জনকণ্ঠ
চাটমোহরে সোনালী আঁশ পাট চাষে কৃষকের সুদিন ফিরেছে। শষ্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলে চলতি পাট মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের ভালো ফলন ও দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাঁসির ঝিলিক।
চলনবিলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সময় মত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে ঢলের পানি না আসলেও কিছুদিন আগে ভারি বৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন জলাশয়ে পানি জমে। সেই পানিতেই এখন চাষিরা পাট কেটে নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং হাট বাজারে তা বিক্রিসহ এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে উপজেলার কিছু কিছু উচু এলাকায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে উপজেলার ১১ ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলে ৮ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ বেড়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে পাট চাষে উৎসাহিত করতে উপজেলার এক হাজার ১০০ কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করেছে কৃষি বিভাগ। বপন মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় সম্পূরক সেচে কৃষকের খরচ বৃদ্ধি পায়নি। তা ছাড়া আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় রোগবালাই ও পোকার আক্রমণও কম হয়েছে।
পাটের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার পাট চাষে ঝুঁকেছে কৃষক। গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষক পাট চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। অনেক কৃষকই বলছেন পাট চাষীদের সুদিন ফিরেছে।
উপজেলার পাকপাড়া গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন বলেন, সে এবছর পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এক বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। পাট উৎপাদন হয় প্রায় ৮-১০ মন। যার বাজারদর প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। এছাড়া বিঘা প্রতি প্রায় ২ হাজার টাকার পাটকাঠি পাওয়া যায়। গত বছর ভরা মৌসুমে প্রতিমণ পাট ২ হাজার থেকে ৩০০০ টাকায় বিক্রি হলেও এবছর বিক্রি হচ্ছে ৩২০০-৩৮০০ টাকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুন্তলা ঘোষ জানান, চাটমোহরে দিন দিন পাট চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়ার মাধ্যমে উন্নত জাতের পাট চাষ বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে।
তাসমিম