ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে মূল ঘটনা আড়াল করে ছাত্রলীগ নেতার গুজব সৃষ্টি

পটুয়াখালী, সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ২৯ জুন ২০২৫

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে মূল ঘটনা আড়াল করে ছাত্রলীগ নেতার গুজব সৃষ্টি

ছবি: জনকণ্ঠ

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে মূল ঘটনাকে আড়াল করে গুজব সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা কামাল গাজীর বিরুদ্ধে।

বিয়ে করা স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে মারধর করে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন কামাল গাজী। শনিবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছেন ওই নেতা।
ঘটনার একটি ১৩ সেকেন্ডের ভিডিও গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে কামাল গাজী তাতে লিখেন বিএনপির নেতাকর্মীরা তার বউকে জোর করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। মুহুর্তে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।
এতে আলোচনা-সমালোচনা চলে সমানভাবে। দেশের বিদ্যমান সহিংসতাকে উস্কে দিতে এবং আইন শৃঙ্খলা প্রশ্নবিদ্ধ করা লক্ষ্যে কামাল গাজী এমন কর্মকাণ্ড করছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সাধারণ মানুষ।


ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি এক তরুণীকে জোর করে কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন। ওই তরুণীকে এসময় কান্নাকাটি ও চিৎকার করতে দেখা যায়। তরুণীর নাম উম্মে সুলতানা তন্বী (১৮)। তিনি একই ইউনিয়নের শাখাওয়াত শিকদারের মেয়ে।

কামাল গাজীর বড় ভাই মো. সাদ্দাম গাজী (২৮) বলেন, কিছুদিন আগে পরিবারের অজান্তে কামাল গাজী ওই তরুণীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন। পনেরো দিন আগে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে এসে বসবাস শুরু করেন। বিষয়টি বিব্রতকর হওয়ায় মেয়ের বাবাকে ফোনে জানিয়ে মেয়েকে নিয়ে যেতে অনুরোধ জানানো হয়, কিন্তু মেয়ের পরিবার তখন উদাসীন ছিল।

তিনি আরও বলেন, কামাল গাজী ছাত্রলীগ করতেন। এ কারণে তরুণীকে নিয়ে বাড়িতে পালিয়ে থাকতে হয়। শনিবার রাত ১২টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইলিয়াস গাজীর ঘরে তাঁকে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে মেয়ের বাবা শাখাওয়াত শিকদারসহ ৮-১০ জন উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের বাড়ি থেকে কামালের স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়।

সাদ্দাম গাজীর ভাষ্য, ‘শাখাওয়াত মেয়েকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে মেয়েটি আপত্তি জানায়। এরপর তাঁকে জোর করে তুলে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে তরুণীর বাবা শাখাওয়াত শিকদার বলেন, ‘তাঁদের না জানিয়ে বিয়ে হয়েছে। ১৫ দিন আগে তাঁর মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে কামাল গাজীর বাড়িতে ওঠে। পরে বিয়ের কাগজপত্র দেখতে চাইলে ছেলে পক্ষ তা দেখাতে পারেনি। তাই আত্মীয়-স্বজন নিয়ে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি।’ তিনি জানান, এখন পর্যন্ত তিনি পুলিশে কোনো অভিযোগ করেননি।

ঘটনার বিষয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন রাঙ্গাবালী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কামাল গাজীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙ্গাবালী থানার ওসি মো. এমারত হোসেন বলেন, ‘মৌডুবি ইউনিয়নের শাখাওয়াত শিকদারের মেয়ে উম্মে সুলতানা তন্বী তাঁর পরিবারের অসম্মতিতে ছাত্রলীগের এক ছেলেকে বিয়ে করেছে বলে শোনা গেছে। ছেলের পরিবার বিয়ের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। শনিবার রাতে মেয়েকে বাবা বাড়ি নিয়ে যান। রাতের এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। মেয়ের বাবা পুলিশকে অবহিত করলে হয়তো এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। তবে এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।’
 

শিহাব

×