
“প্রতিরোধে মুক্তি, চক্র ভাঙার অঙ্গীকার”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০২৫ পালন করেছে বাংলাদেশ গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (৫৫ বিজিবি)। দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালিত হয়।
এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল সীমান্ত ও সমাজে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও পাচার রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।
দিবসটি উপলক্ষে ইউনিট সদর দপ্তরসহ আশপাশের এলাকায় উন্মুক্ত স্থানে প্যানাফ্লেক্স বোর্ড ও সচেতনতামূলক ব্যানার স্থাপন করা হয়। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝে মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানাতে বিতরণ করা হয় লিফলেট ও পোস্টার।
ব্যাটালিয়নের চিত্তবিনোদন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় একটি বিশেষ প্রেরণামূলক ক্লাস, যার সভাপতিত্ব করেন ৫৫ বিজিবি’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজিলুর রহমান। তিনি বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবি সবসময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সীমান্তে নিয়মিত অভিযান ছাড়াও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বিজিবি সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।”
তিনি আরও বলেন, “মাদক চক্র ভেঙে দিতে হলে শুধু আইন প্রয়োগ নয়, বরং সম্মিলিত সামাজিক সচেতনতাও প্রয়োজন। এই দিবসের কর্মসূচির মাধ্যমে তা বাস্তবে প্রতিফলিত হচ্ছে।”
হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ ১৬টি বর্ডার আউটপোস্ট (বিওপি)-এর ব্যবস্থাপনায় নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় জনগণের অংশগ্রহণে মাদকবিরোধী কর্মসূচি পালিত হয়। স্থাপন করা হয় সচেতনতামূলক ব্যানার এবং বিতরণ করা হয় তিন হাজার পিস লিফলেট ও পোস্টার। জনসমাবেশ ও সভার মাধ্যমে মাদকের কুফল সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করা হয়।
দিবসটির কর্মসূচিতে স্থানীয় জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। বিজিবি জানায়, এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
৫৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত অভিযানে ১ কোটি ৯২ লাখ ৮৭ হাজার ৭০০ টাকা মূল্যের ভারতীয় মদ ৫,১০৮ বোতল, বাংলাদেশি মদ ৮৫ লিটার, ভারতীয় গাঁজা ২,৩৫৮ কেজি, ফেন্সিডিল ২৫৭ বোতল, বিয়ার ৪০৫ ক্যান, ইয়াবা ১০,০৪৮ পিস ও ইস্কফ সিরাপ ৩২১ বোতল জব্দ করা হয়েছে। এসব অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ জন মাদক পাচারকারী এবং ২ জন পলাতক রয়েছে, যাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মাদকের বিরুদ্ধে সীমান্তে বিজিবির দৃঢ় অবস্থান, অভ্যন্তরীণ সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনে যে ভূমিকা তারা রেখে চলেছে, তা মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
মিমিয়া