
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের লক্ষদিয়া গ্রামে ৫শ প্রজাতির গাছ নিয়ে গাছ বাড়ি তৈরি করেছেন আমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি । শখ ও বিলুপ্তপ্রায় গাছ সংগ্রহ করে রাখার জন্য এবং গাছের গবেষণাগার তৈরির লক্ষ্যে দৃষ্টিনন্দন বাড়িটি তৈরি করেছেন সূচিশিল্পী আমিনুল ইসলাম।
পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকলেও তাঁর মন পড়ে থাকে সবুজেঘেরা গ্রামের এই বাড়িতে। ১৫ বিঘা জমির ওপর নির্মিত বাড়ির সামনে ও আশপাশে দেশি-বিদেশি ৫শ প্রজাতির প্রায় ১০ হাজার গাছ রয়েছে। বাড়িটি আশপাশের কয়েক জেলার মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
বাড়িটি এখন গাছের গবেষণাগার। বাড়ির বিশাল আঙিনায় শোভা পাচ্ছে বৈচিত্রময় ও দুর্লভ সব গাছ। সৌন্দর্যবর্ধক গাছগুলো নান্দনিক সাজে গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া ফলদ,বনদ,ঔষধীবৃক্ষও রয়েছে এখানে। বিদেশি প্রজাতির ক্যাসিয়া,উইসটেরিয়া,কিগেলিয়া আমাজন লিলি সহ দুর্লভ সব গাছ।
বেলজিয়াম,পর্তুগাল,মালয়েশিয়া, জাপান,ফ্রান্স,ইতালি ,ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে গাছ নিয়ে এসে রোপন করা হয়েছে বাড়িটির আঙ্গিনায়। গাছে গাছে বাসা বেঁধেছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। বাড়িজুড়ে সারাক্ষণ পাখির কলরব। এলাকাবাসী বাড়িটির নাম দিয়েছে ‘গাছবাড়ি'।
জানা যায়, ১৫ বিঘা জমি নিয়ে ২০১৪ সালে তৈরি করা হয় এই বাড়িটি। তৈরি করেন গাছের সংগ্রহশালা। দেশ-বিদেশ থেকে গাছ পছন্দ করে নিয়ে আসেন। এরপর এই সংগ্রহশালায় লাগিয়ে বড় করে তোলেন। প্রতি মাসেই বাড়ছে এই গাছের সংখ্যা। ঢাকা থেকে প্রতি মাসে বাড়িতে আসেন আমিনুল,সঙ্গে নিয়ে আসেন নানা প্রজাতির গাছ। গাছবাড়িতে যেমন রয়েছে মূল্যবান গাছ, তেমনি রয়েছে দেশীয় ষড়াসহ নানা গাছ। যে গাছটি জঙ্গলে হয়ে থাকে,সেই গাছটিও তিনি এই বাড়িতে লাগিয়ে সুন্দর করে রাখেন। জীবনে যা আয় করেছেন তার বেশি পরিমাণ ব্যয় করেছেন এই গাছের সংগ্রহশালা তৈরিতে। গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণেও রয়েছে ৩ জন কর্মচারী।
গাছবাড়ির মালিক আমিনুল ইসলাম বলেন,ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে বিলুপ্ত গাছের পরিচয় ও গাছের গবেষণাগার তৈরির চিন্তা মাথায় নিয়েই এমন উদ্যেগ নিয়েছি। গাছের ফুল ফলের কারণে প্রতিদিনই এই বাড়িটিতে বিভিন্ন প্রজাতির শত শত পাখি আসে। গাছের বিভিন্ন ফল পাখিরাই খায়। এছাড়াও নিজ উদ্যেগে প্রতিদিনি সকাল ও বিকালে পাখিগুলোকে খাবার দিই। এগুলো মনের খোরাক মেটায়। ভবিষ্যত প্রজন্ম যদি এসব বিলুপ্তপ্রায় গাছ নিয়ে গবেষণা করতে চায় তবে আমার এই সংগ্রহশালা তাদের কাজে লাগতে পারে।’
নোভা