ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চিকিৎসক সংকটে স্থবির হাসপাতাল, তিন মাস ধরে বন্ধ অস্ত্রোপচার

মনজু শেখ, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার,রাজবাড়ী

প্রকাশিত: ১৬:০৯, ২৩ মে ২০২৫

চিকিৎসক সংকটে স্থবির হাসপাতাল, তিন মাস ধরে বন্ধ  অস্ত্রোপচার

ছবি: জনকণ্ঠ

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ১৭টি পদের বিপরীতে বর্তমানে মাত্র ৪ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতালের কার্যক্রম। ফলে গত তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সকল ধরনের অস্ত্রোপচার, বিশেষ করে সিজারিয়ান অপারেশন। এতে করে জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য রোগীদের জেলা সদর হাসপাতাল কিংবা বেসরকারি ক্লিনিকে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, এটি ৫০ শয্যার হলেও সরঞ্জাম ও সুবিধা মিলছে ৩০ শয্যার হাসপাতালের মতো। যেখানে চিকিৎসা দিতে নির্ধারিত ১৭ জন চিকিৎসকের মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, একজন গাইনি কনসালটেন্ট এবং দুইজন মেডিকেল অফিসার। বাকি পদগুলো খালি রয়েছে বা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা প্রেষণ ও প্রশিক্ষণে রয়েছেন।

হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতি মাসে গড়ে চার হাজারের বেশি রোগী বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। এছাড়া প্রতি মাসে ভর্তি হন প্রায় ৪০০ রোগী। গত বছর সেপ্টেম্বরে একজন অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক নিয়োগ পাওয়ার পর চার মাসে ২২টি সিজারিয়ান অপারেশন সম্পন্ন হয়। কিন্তু ওই চিকিৎসকের চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বদলির পর থেকেই অস্ত্রোপচার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

সরাসরি ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালটি সোনাপুর মোড় থেকে কিছুটা দূরে মাঠের মধ্যে অবস্থিত। জরুরি বিভাগ সচল থাকলেও অস্ত্রোপচার কক্ষ কার্যত অচল। স্থানীয় একজন জানান, তার মেয়েকে প্রসবজনিত জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও সেখানে কোনো সিজার করার ব্যবস্থা না থাকায় ফিরে যেতে হয়।

কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসরাত জাহান উম্মন জানান, চিকিৎসক সংকটের কারণে রোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।

রাজবাড়ী জেলার সিভিল সার্জন এস এম মাসুদ বলেন, ‘চিকিৎসক সংকট নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই সমাধান আসবে।’

চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত প্রয়োজন কার্যকর পদক্ষেপ ও পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ—এমনটাই প্রত্যাশা এলাকার মানুষ ও সংশ্লিষ্টদের।

সাব্বির

×