
ছবি: জনকন্ঠ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে বিশিষ্ট দানশীল ও সমাজসেবক ব্যাক্তি প্রয়াত খোদাবক্সের নামে স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে। গত ৫ই আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর স্বগৌরবে ফিরল পাঁচবিবি খোদাবক্স স্টেডিয়াম। এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পাঁচবিবি পৌর শহরের উপজেলা সড়ক সংলগ্ন স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নেতারা ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম হিসেবে নামকরন করেছিলেন। বর্তমানে ‘খোদাবক্স স্টেডিয়াম’ নামকরন হওয়ায় সন্তুোষ প্রকাশ করেন জমিদাতার পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
প্রয়াত খোদাবক্সের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭০ বছর আগে স্থানীয় সম্পদশালী খোদা বক্স তার জীবদ্দশায় এলাকার উন্নয়ন ও সমাজসেবামূলক কাজে বেশ নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় তিনি খেলার মাঠের (বর্তমান স্টেডিয়াম) জন্য ২৭৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ জমি সে সময়ের গন্যমান্য ব্যক্তিদের বৈঠকে মৌখিক দানপত্র করে দেন। এ ছাড়াও বর্তমানে ডাকবাংলো, ঈদগাহ মাঠ, মসজিদ ও সে সময়ের সরকারি অফিস স্থাপনের জন্য বিপুল পরিমান সম্পত্তিও দান করে গেছেন তিঁনি।
এলাকার বিশিষ্টজনরা জানান, এলাকার উন্নয়নের কথা ভেবে খোদা বক্স উল্লেখিত সম্পত্তিই শুধু দান করেননি, তিনি ক্রীড়া, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে বেশ ভূমিকা রেখে গেছেন। কিন্তু বারবার সরকার বদল হলেও উত্তরাঞ্চলের কৃতি সন্তান খোদা বক্সের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে তেমন কেউ এগিয়ে আসেনি। এরপর আবার ২০১৬-২০১৭ সালের দিকে অতি উৎসাহী আওয়ালীগের জনপ্রতিনিধিরা খোদা বক্সের দান করা সম্পত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত স্টেডিয়ামের নামকরন করেন শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়াম। এতে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি।
স্থানীয় সমাজকর্মী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ও পাঁচবিবি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোযাফফর রহমান সাজা জানান, এর আগে বিগত সরকারের আমলে স্টেডিয়ামটির ভবনে শেখ রাসেল লেখা ছিল এবং মূল ফটকে ‘পাঁচবিবি ষ্টেডিয়াম লেখা ছিল। যদি খোদাবক্সের নামে প্রয়োজনীয় দলিল ও কাগজ পত্র থাকে, আর তিনি যদি মৌখিক দানপত্রও করে থাকেন এবং উক্ত সম্পত্তির কোন বৈধ রেজিষ্ট্রি না থাকে তাহলে ষ্টেডিয়ামটির খোদাবক্স নামকরনে অনুমোদন দিতে সরকারের কাছে জোর দাবী জানান।
খোদা বক্সের দুই নাতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব বুলু এবং চিত্র ভাষ্কর ও কন্ঠ শিল্পী এম আই মিঠু বলেন, আমাদের দাদা স্টেডিয়ামের ওই সম্পত্তির দাতা হলেও শেখ রাসেলের নামে স্টেডিয়ামের নাম করা হয়েছিল ক্ষমতার জোরে। ‘২০১৬-১৭ অর্থ বছরে স্টেডিয়ামটির একটি ভবনের দুইটি টয়লেট কাম বাথরুম নির্মানের জন্য অওয়ামীলীগ সরকার মাত্র ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। সেই কারনে কোনো প্রকার প্রজ্ঞাপন বা আদেশ ছাড়াই স্থানীয় আওয়ামীলীগের জনপ্রতিনিধি ও নেতারা তাদের স্মৃতি বিজরিত "পাঁচবিবি স্টেডিয়ামকে" শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম হিসেবে ঘোষণা দেয়। অবশেষে দীর্ঘ দিন পর হলেও নামের স্বীকৃতি পাওয়ায় আত্মতৃপ্ত বলে জানান খোদাবক্স বংশধররা।
মুমু