ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বেলগাঁও চা বাগান: সবুজের এক মহাসমারোহ

নুর আহমেদ সিদ্দিকী, কন্টিবিউটিং রিপোর্টার, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১৪:২৯, ২০ মে ২০২৫

বেলগাঁও চা বাগান: সবুজের এক মহাসমারোহ

ছবি: জনকন্ঠ

দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী একমাত্র পর্যটন স্পট বাঁশখালীর পুকুরিয়া বেলগাঁও চা বাগান। এ যেন  সবুজের এক মহাসমারোহ। পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকে এই পর্যটন কেন্দ্র। বর্তমানে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত পর্যটক চা বাগানটি একনজর দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন।

বাঁশখালীতে অবস্থিত ৩ হাজার ৪শ ৭২.৫৩ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এই চা বাগানটি একসময়ে সিলেট চা বাগানের অধীনে থাকলেও বিগত ২০১৫ সাল থেকে দেশের অন্যতম এই বাগানটির দায়িত্বভার গ্রহণ করে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ।

চা বাগানটিতে ম্যানেজার ১ জন, সহকারী ম্যানেজার ৪ জন, স্টাফ ২৬ জন, শ্রমিক ৬০০ জন। সারাদেশে ১৬২টি চা বাগানের মধ্যে বাঁশখালী বেলগাঁও চা বাগানটি গুণগত মান অনুযায়ী ১২তম এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের মধ্যে ৩য় স্থানে রয়েছে। বর্তমানে চা বাগান এলাকায় ৬৩৮ একর আবাদি এবং ৫০ একর জায়গায় আগর চাষ করা হয়েছে। চাঁদপুর বেলগাঁও চা-বাগানে শতকরা ৯০ ভাগ ক্লোন চা এবং চায়ের গুণগত মান ভালো। চায়ের উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে আবহাওয়া নির্ভর। সেকারণে চা-বাগানের উপযোগী বৃষ্টিপাতের উপর উৎপাদনের তারতম্য হয়।

প্রতিবছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে চা-পাতা উৎপাদন কম হয়ে থাকে। ২০০২ সালে ৮০ হাজার কেজি চা উৎপাদন দিয়ে কার্যক্রম শুরু করা বাগানটির চলতি বছরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লক্ষ ৫০ হাজার কেজি।

চা বাগানের অভ্যন্তরে ৬ শতাধিক কর্মচারীর নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষাসহ অন্যান্য সার্বিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে বলে জানান চা-বাগানের ম্যানেজার আবুল বাশার।

চা-বাগান কর্তৃপক্ষের নিজস্ব উদ্যোগে প্রতিদিন বাগানের সর্বত্র আধুনিক উপায়ে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়।

তবে চা বাগানের যাতায়াতের সড়কটি যথাযথভাবে সংস্কার না হওয়ায় এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হলেও তা অজ্ঞাত কারণে বন্ধ রয়েছে। সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের দাবি জানান এলাকাবাসী।

বাঁশখালীর বৈলগাঁও পুকুরিয়া সরকার চা বাগান পরিদর্শনকালে বাগানের ম্যানেজার আবুল বাশারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, বাঁশখালীর এই বিশাল চা বাগানের চা পাতার সারাদেশে সুখ্যাতি রয়েছে। এই মানের জন্য চা বাগানের কর্মকর্তারা প্রতিদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদন যত বৃদ্ধি পায় সরকার রাজস্ব তত বেশি পায়। বর্তমানে চা পাতার বিক্রিত অর্থ থেকে সরকার ১৫% হারে ভ্যাট পান। তবে তিনি বাগানের কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, চা বাগানের চারপাশে ঘেরা বেড়া না থাকায় প্রতিদিন হাতির পাল চা বাগানে ছুটে আসে। ফলে শ্রমিক-কর্মচারীরা প্রায় শঙ্কিত থাকে। তিনি সরকারি এই রাজস্ব আয়ের অন্যতম চা-বাগানকে আরো বেশি পৃষ্ঠপোষকতার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

মুমু

×