ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যা ২০ বছরে হয়নি, তা সম্পন্ন হবে মাত্র ৬ মাসে!

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১৮ মে ২০২৫

যা ২০ বছরে হয়নি, তা সম্পন্ন হবে মাত্র ৬ মাসে!

ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দরে দুই দশকের বেশি সময় ধরে জমে থাকা প্রায় ১০ হাজার আমদানি পণ্যভর্তি কনটেইনার অবশেষে নিলামের মাধ্যমে নিষ্পত্তির পথে। বন্দর এলাকায় জমে থাকা এসব কনটেইনার শুধু জায়গা দখল করেই নেই, বরং বন্দর ব্যবস্থাপনায় সৃষ্টি করছে মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকি। বিষয়টি মাথায় রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি একটি বিশেষ আদেশ জারি করেছে, যার ফলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ এখন থেকে প্রথম নিলামেই সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারবে। আগে যেখানে তিন দফায় নিলামের বাধ্যবাধকতা ছিল, সেখানে এই আদেশ দীর্ঘসূত্রতা দূর করে দ্রুত নিষ্পত্তির পথ খুলে দিয়েছে।

 

 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমস বিভাগ আশা করছে, এই উদ্যোগের ফলে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই এসব কনটেইনারের নিষ্পত্তি সম্ভব হবে। বর্তমানে ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস ধারণক্ষমতার চট্টগ্রাম বন্দরে রয়েছে ৪০ হাজার ৭০৮ টিইইউএস কনটেইনার, যার মধ্যে ১০ হাজারের বেশি নিলামযোগ্য। অথচ বন্দরের প্রায় ৩০ শতাংশ জায়গা খালি রাখতে হয় কনটেইনারবাহী লরি ও পণ্যবাহী কাভার্ড ভ্যান চলাচলের জন্য। কিন্তু বহু বছর ধরে আটকে থাকা এই কনটেইনারগুলো জায়গা দখল করে রাখায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

এ ছাড়া বন্দরের বিভিন্ন শেড ও ইয়ার্ডে মজুত রয়েছে বিপজ্জনক রাসায়নিক ও বাল্ক পণ্য, যা বন্দরের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আদেশ অনুযায়ী, এখন এসব ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যও ধ্বংসের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, নানা জটিলতায় এসব পণ্য বন্দরে পড়ে ছিল, কিন্তু এই আদেশ কার্যকর হওয়ায় তা দ্রুত সরিয়ে ফেলা যাবে। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার সাকিব হোসেন বলেন, আদেশটি না এলে এসব পণ্যের নিষ্পত্তিতে আরও পাঁচ-ছয় বছর লেগে যেত।

 

 

নতুন আদেশের ফলে নিলাম প্রক্রিয়ায় আগের নিয়ম অনুযায়ী ৬০ শতাংশ দর বেঁধে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আর থাকছে না। সর্বোচ্চ দরদাতাকে প্রথম নিলামেই পণ্য দেওয়া যাবে, ফলে ব্যবসায়ীরাও আগ্রহী হচ্ছেন। চট্টগ্রাম কাস্টমস বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরী ও সভাপতি ফেরদৌস আলম মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তে বন্দরের জট অনেকটাই কেটে যাবে এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমও গতি পাবে। এরই মধ্যে নিলাম শাখা কাজ শুরু করেছে এবং প্রথম দিন থেকেই নিলাম প্রক্রিয়া জোরেশোরে এগোচ্ছে। সব মিলিয়ে, দীর্ঘ ২০ বছরের জট কাটিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ছয় মাসের মধ্যেই পুরনো পণ্যের বোঝা থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে।

আঁখি

×