
কুড়িগ্রামের উলিপুরে নেশার টাকা জোগাড় করতে ফুফুর স্বর্ণের নাকফুল, কানের দুল ও গলার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তাফিজার আকালু।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ছাট কাগজীপাড়া গ্রামে। নিহত গোলেনুর বেগম (৬০) ছাট কাগজীপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে। অভিযুক্ত রুবেল হোসেন (২৪) একই গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত গোলেনুর বেগম সম্পর্কে অভিযুক্ত রুবেল হোসেনের আপন ফুফু। দীর্ঘদিন থেকে ভাই কফিল উদ্দিন (৫৫) ও কোহিনুর বেগম (৫৮) এর সাথে একই বাড়িতে বসবাস করে আসছিলো গোলেনুর বেগম। কফিল উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসেন একজন মাদকসেবী। নেশাগ্রস্ত হওয়ায় সে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করেন। গত ১২ই মে রাত ১০টায় ভাতিজা রুবেল হোসেন তার অজ্ঞাত একজন বন্ধুসহ বাড়িতে এসে নেশার টাকা ও ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কথা বলে ফুফু গোলেনুর বেগমের কাছে টাকা দাবি করে। এসময় গোলেনুর বেগম টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রাতের খাবার শেষে ভাই কফিল উদ্দিন, ভাতিজা রুবেল ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাদের রুমে ঘুমায়। পরে কোহিনুর বেগম তার রুমে ও গোলেনুর বেগম পাশের রুমে ঘুমিয়ে পড়েন। ওই রাতেই রুমের পার্টিশনের টিন খুলে গোলেনুর বেগমের রুমে প্রবেশ করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভাতিজা রুবেল হোসেন তার অজ্ঞাতনামা বন্ধুসহ ফুফু গোলেনুরকে গঁলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর গোলেনুর বেগমের নাকে থাকা স্বর্ণের ফুল, স্বর্ণের কানের দুল ও গলার স্বর্ণের চেইন এবং অপর ফুফু কোহিনুর বেগমের স্বর্ণের নাকফুল ও কানের দুল নিয়ে পালিয়ে যান। এঘটনায় মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে নিহতের বড় ভাই আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে উলিপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহতের ছোট বোন কোহিনুর বেগম বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার নাকের স্বর্ণের ফুল ও কানের দুল নাই। তারপর ভাত রান্না করে ভাই কফিল উদ্দিনসহ খাবার খাই। কিছুক্ষণ পর খাওয়ার জন্য গোলেনুর বেগমকে ডাকলে কোন সাড়াশব্দ পাইনি। এরপর তার ঘরের দরজায় ধাক্কা দিলে দরজা খুলে যায়। ঘরের ভিতরে ঢুকে দেখতে পাই আমার বোন গোলেনুর বেগমের গঁলায় গামছা প্যাঁচানো ও পরনের কাপড় দ্বারা দুই পা বাঁধা এবং নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। পরে আমি চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে গোলেনুর বেগমকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। কোহিনুর বেগম আরো বলেন, ভাতিজা রুবেল নেশার টাকা না পেয়ে গোলেনুরকে হত্যা করে এবং তার নাকে থাকা স্বর্ণের নাকফুল, স্বর্ণের কানের দুল ও গলার স্বর্ণের চেইন নিয়ে পালিয়ে যায়। আমি এই হত্যার বিচার চাই।
এবিষয়ে বুধবার (১৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
সজিব