ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

সেবাহীন হাসপাতাল: নেই এক্স-রে, আলট্রাসনো মেশিন, বন্ধ অ্যাম্বুলেন্স

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ১০ মে ২০২৫

সেবাহীন হাসপাতাল: নেই এক্স-রে, আলট্রাসনো মেশিন, বন্ধ অ্যাম্বুলেন্স

ছবি: জনকণ্ঠ

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে, আলট্রাসনো মেশিন পাঁচ বছরের অধিক সময় ধরে অকেজো হয়ে রয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এতে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় প্রায় ৫ লাখ মানুষের চিকিৎসায় একমাত্র সম্বল এই ৩১ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালটি। 

১৯৭২ সালে উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর ২০১৯ সালে ৫০ শয্যার নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবল না পাওয়ায় শুরু করা যাচ্ছে না ৫০ শয্যার কার্যক্রম। এতে উপজেলার প্রায় ৫ লাখ মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ৭ বছর আগে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও জনবল অনুমোদন এখনো হয়নি। ৩১ শয্যার হাসপাতালটিতে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকে গড়ে ৫০ থেকে ১০০ জন। আর বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেয় গড়ে ৪০০ রোগী। বর্তমানে ৩১ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা চলতে থাকায় শয্যার অভাবে অতিরিক্ত ভর্তি হওয়া রোগীদের ঠাঁই হয় ওয়ার্ডের মেঝেতে।

এই ৩১ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪ জন চিকিৎসক পদের বিপরীতে রয়েছে ১৯ জন। শূন্য রয়েছে ৫টি পদ। এর মধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ও দন্ত চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। মেডিকেল অফিসার ১ জন ও দুই জন সহকারী সার্জনের পদ শূন্য রয়েছে। 

এছাড়াও হাসপাতালে সরকারি ৩টি অ্যাম্বুলেন্স কয়েক বছর ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। ৫ বছর যাবত সরকারি এই হাসপাতালের এক্স-রে, আলট্রাসনো মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় চিকিৎসা নিতে আসো রোগীদের পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বাহিরে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। এতে সরকারি আধুনিক চিকিৎসাসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। 

গারুড়িয়া ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা বারেক হাওলাদার জানান, "গাছের ডাল কাটতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে গেছি। হাতের হাড্ডি ভেঙ্গে গেছে। ডাক্তার এক্সে করার জন্য বলেছেন কিন্তু হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন না থাকায় এখন বাহির থেকে এক্সরে করানো হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে এক্সরে মেশিন থাকলে বাহির থেকে এক্স-রে করানোর দরকার হতো না। এখন আমাদেরকে টাকা দিয়ে এক্সরে করাতে হয়।"

এছাড়াও ৩১ শয্যার হাসপাতালটির দীর্ঘ দিনে সংস্কার কাজ না করার ফলে টয়লেট, মেঝে ও দেওয়ালের রং উঠে গেছে। এতে শেওলার পাশাপাশি জীবাণুর আক্রমণ বেড়ে গেছে। এছাড়া হাসপাতাল এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় রোগী ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে চুরির ঘটনাসহ অপ্রীতিকর ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। সরকারি এই হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন স্থানীয়রা। 

এএইচএ

×