
রাজশাহী নগরীতে এক কোটি ৩৪ লাখ টাকায় দুটি সড়কের সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মাটি পুরানো ইট ও খোয়া ব্যবহার করে বিপুল অঙ্কের টাকার উন্নয়নকাজে খরচ দেখিয়ে দুর্নীতির চেষ্টা চলছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে পুরানো ইট-খোয়ার ওপরই নতুন কার্পেটিংয়ের প্রস্তুতির দৃশ্য দেখা গেছে। অথচ এই প্রকল্পের দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলীরা অনেক সময়ই অনুপস্থিত। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ‘লোকাল গভর্নমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি’ প্রকল্পের আওতায় এই সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পে রাসিক পেয়েছে মোট ৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভদ্রা জামালপুর থেকে চকপাড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডের হড়গ্রাম এলাকার ৩০০ মিটার সড়ক সংস্কারের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এই দুটি সড়কের সংস্কার কাজেই চলছে মাটি পুরানো ইট ও খোয়া ব্যবহার।
জানা যায়, জামালপুর-চকপাড়া সড়কে পুরানো কার্পেটিং তুললেও পুরোপুরি সরানো হয়নি। রাস্তার পুরানো খোয়ার ওপরই নতুন লেয়ার বসানোর কাজ চলছে। এ ছাড়া সড়কের দুপাশে দেওয়া ইটগুলোর বেশিরভাগই পুরানো, কিছু নতুন ইট ব্যবহার করা হলেও তা সামান্য। স্থানীয়দের অভিযোগ, হড়গ্রাম এলাকার সড়কটি ভালো অবস্থায় থাকলেও তা খুঁড়ে নতুন কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হলো গোলাম সারোয়ার ও অপরটি আল হাদি ট্রেডার্স। ঠিকাদার গোলাম সারোয়ার প্রথমে পুরানো উপকরণ ব্যবহারের বিষয়টি অস্বীকার করেন, পরে বলেন বিষয়টি সিটি করপোরেশন জানে। এর পর আর কোনো মন্তব্য না করে ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিনি।
রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী আহমদ আল মঈনের ভাষ্য, প্রকল্পটি যথাযথ অনুমোদন ও পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পুরানো রাস্তার কার্পেটিং তুলে নতুন এজিং ও বেড প্রস্তুতের কাজ চলমান। তবে সরেজমিন দেখা গেছে, পুরানো খোয়ার ওপরই নতুন কার্পেটিংয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত কুমার সরকার জানান, পুরানো উপকরণ ব্যবহার করা ঠিকাদারের পক্ষে অনুমোদিত নয়, আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব। তবে কাজ শুরুর পর এখন পর্যন্ত সাইটে নিয়মিত পরিদর্শনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি একবার গিয়েছিলাম, এখন সহকারী প্রকৌশলীরা দেখছেন। স্থানীয়দের মতে, এ ধরনের তদারকি ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতির সুযোগ থেকেই যাচ্ছে। তারা দ্রুত প্রকল্পে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্যানেল