ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৭ মে ২০২৪, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

চাঁদপুরে নষ্ট হচ্ছে জব্দ জেলে নৌকা

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর

প্রকাশিত: ২২:১৫, ৬ মে ২০২৪

চাঁদপুরে নষ্ট হচ্ছে জব্দ জেলে নৌকা

অবৈধভাবে মাছ ধরার সময় নদী থেকে জব্দ করা নৌকা

জাটকা রক্ষায় এ বছর চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রমে জেলে আটকের পাশাপাশি জেলেদের মাছ ধরার ৬০টি নৌকা জব্দ করা হয়। এসব নৌকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকে। তবে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর মালিককে জব্দ নৌকা নিতে হয়। দীর্ঘদিন পড়ে থাকলে নৌকাগুলোতে থাকা মূল্যবান ইঞ্জিনসহ বিভিন্ন অংশ রোদ ও বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে বলে জেলেদের অভিযোগ।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বলছে, আইনি প্রক্রিয়া ও আদালতের নির্দেশ ছাড়া এসব নৌকা মালিককে দেওয়ার ইখতিয়ার কারও নেই। সোমবার সকালে শহরের মাদ্রাসা রোড লঞ্চঘাটের দুই পাশে নৌপুলিশের অভিযানে জব্দ নৌকাগুলো পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস চাঁদপুরের অভয়াশ্রম এলাকায় জেলা টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে অবৈধভাবে নদীতে মাছ ধরতে আসা জেলেদের হাতেনাতে আটক ও তাদের হেফাজতে থাকা জেলে নৌকাগুলো জব্দ করা হয়। দুই মাসে আটক তিন শতাধিক জেলের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল-জরিমানা করা হয়। কিন্তু জেলেদের সঙ্গে থাকা জব্দ জাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট এবং জেলে নৌকা মামলার আলামত হিসেবে সংরক্ষণ করে কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশ।

চাঁদপুর শহরের মেঘনা উপকূলীয় এলাকার জেলে রমজান আলী, ইছহাক ও মহসীন মিয়া জানান, আমরা গোপনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে নেমে মাছ ধরেছি। যে কারণে দুই মাস জেল খাটতে হয়েছে। জেল থেকে বের হয়ে দেখি আমাদের নৌকাগুলো নষ্ট হয়ে আছে। আদালত যদি কম সময়ের মধ্যে আমাদের নৌকাগুলো নেওয়ার নির্দেশ দেন তাহলে নিতে পারব। বর্তমানে কিছু নৌকা ভেঙে চলার অযোগ্য হয়ে গেছে।
চাঁদপুর নৌথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বলেন, জাটকা রক্ষার এবারের অভিযান খুবই কঠোর এবং সফল হয়েছে। অভিযানে অনেক জেলে, জাল, জাটকা ও নৌকা জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে টাস্কফোর্সের অভিযানে এবং নৌপুলিশের অভিযানেও মাছ ধরার নৌকা জব্দ হয়। সব বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ হয়েছে। জব্দ নৌকা আদালতের নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, আমাদের গত দুই মাসের মৎস্য অভিযানে যেসব জলযান ও নৌকা জব্দ করা হয়েছে, সেগুলো পরবর্তী আইনানুগ নিষ্পত্তির জন্য কার্যক্রম চলমান আছে। এর মধ্যে আদালতের নির্দেশক্রমে কিছু নৌকা মালিক ফেরত পেয়েছে। চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসন বলেন, এ বছর দুই মাসের অভিযানে জেলা টাস্কফোর্স ৬০টি মাছ ধরার নৌকা জব্দ করে।

এসব নৌকা বর্তমানে কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের হেফাজতে রয়েছে। জেলা টাস্কফোর্স নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এসব নৌকা নিলামে বিক্রি করবেন। আর নৌপুলিশের হেফাজতে থাকা নৌকা আদালতের নির্দেশের পর মালিক নিতে পারেন।

×