ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্থপতি ইমতিয়াজ হত্যায় মেঘের স্বীকারোক্তি, মুন্না ও অভি রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ 

প্রকাশিত: ২৩:০১, ২৭ মার্চ ২০২৩

স্থপতি ইমতিয়াজ হত্যায় মেঘের স্বীকারোক্তি, মুন্না ও অভি রিমান্ডে

স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া

 

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া (৪৭) হত্যার ঘটনায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেপ্তারকৃত আসামি মেঘ আনোয়ার ওরফে এহসান। মামলার অপর দুই আসামি মুন্না ও অভির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

সোমবার (২৭ মার্চ) বিকালে মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা আক্তারের আদালতে আসামিদের হাজির করা হয়। 

মুন্সীগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক জামাল হোসেন জানান, মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশ দশদিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত দুইজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে আসামি মেঘ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। 

৭ মার্চ নিখোঁজ স্থপতি ইমতিয়াজের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানায় গেল ৯ মার্চ হত্যা মামলা দায়ের হয়। পরে ২২ মার্চ মামলাটি জেলা ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হলে তারা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহযোগিতায় রবিবার সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মুন্না, মেঘ আনোয়ার ও অভিকে গ্রেপ্তার করে। আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার একটি গ্যারেজ থেকে হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত একটি গাড়ি জব্দ করা হয়। 

সোমবার (২৭ মার্চ) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার গোলাম সবুর জানান, হত্যায় জড়িত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত আরাফাত ও আলিফ নামের আরও দুইজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ইমতিয়াজ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির নকশার কাজ করতেন। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। 

গত ৭ মার্চ দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরেন নি। এ নিয়ে ৮ মার্চ তার স্ত্রী ফাহামিদা আক্তার কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ৮ মার্চ মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের মরিচা সেতু এলাকা থেকে একটি ঝোঁপের ভেতর থেকে ইমতিয়াজের লাশ উদ্ধার হয়। কিন্তু আঙ্গুলের ভাচ নিয়ে পরিচয় বের করতে না পারায় বেওয়ারিশ হিসেবে লাশটি দাফন করা হয়। পরে সামাজিক যোযোগ মাধ্যমে একটি লাশের ছবি থেকে পরিবার জানতে পারে সিরাজদিখানে যে ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার হয়েছে, তা ইমতিয়াজের। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে মুন্সীগঞ্জ পৌর কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলন করে শনাক্ত করেন ইমতিয়াজের স্বজনেরা। 

গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানায়, একটি অ্যাপের মাধ্যমে চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলে বাসায় ডেকে নিতেন। পরে আপত্তিকর অবস্থার ভিডিও, ছবি রেকর্ড করে ওই ব্যক্তির কাছে টাকা আদায়ের চেষ্টা করতেন। ভুক্তভোগীরা সামাজিক অবস্থানের কারণে কখনোই এ বিষয়ে মুখ খুলতেন না। চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণের টাকা জমা হতো চক্রের সদস্য আরাফাতের মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। 

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরও জানান, ওই অ্যাপের মাধ্যমে স্থপতি ইমতিয়াজের সঙ্গে চক্রের সদস্য আসিফের পরিচয় হয়। ৭ মার্চ ইমতিয়াজকে মোবাইল ফোনে কলাবাগানের একটি বাসায় ডেকে নেন আসিফ। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন আরাফাত, মুন্না ও মেঘ। তারা সবাই মিলে তাকে ফাঁদে ফেলে টাকার জন্য মারধর করেন। একপর্যায়ে ইমতিয়াজ মারা যান।

এসআর

×