ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাহারি রকম নিরামিষ খেতে হাজারো মানুষের ঢল

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ২৭ নভেম্বর ২০২২

বাহারি রকম নিরামিষ খেতে হাজারো মানুষের ঢল

বাহারি রকম নিরামিষ 

মাদারীপুরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উন্মুক্ত মধ্যান্নভোজের আয়োজন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য পেটভরে সুস্বাদু খাবার খাওয়ানো জন্য পোলাও ভাতের সঙ্গে রাখা হয়েছে বাহারি রকম সবজি, ভাঁজি, তরকারি, ডাল, চাটনি, মিস্টান্নসহ ১২ আইটেম। 

ব্যতিক্রমী এই নিরামিষ খাবার খেতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো ভক্ত একসঙ্গে এসেছেন  সদর উপজেলার মস্তফাপুর বাজার সর্বজনীন শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ্র মন্দির প্রাঙ্গণে। শনিবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধা পর্যন্ত চলে তাদের এ খাবার পরিবেশনা।

আয়োজকরা জানান, দেশ মাতৃকা ও বিশ্ব জননীর সকল সন্তানের শান্তি ও মঙ্গল কামনায় গত ১৬ দিন ধরে মস্তফাপুর বাজার সর্বজনীন শ্রী শ্রী রাধাগেবিন্দ্র মন্দির প্রাঙ্গণে হরিনাম সংকীর্তনের আয়োজন করে মন্দির কমিটি। 

অনুষ্ঠানে প্রতিদিন দুপুরে ও রাতে উন্মক্ত সকল শ্রেণি পেশার মানুষদের নিরামিষ খাবার খাওয়ানো হয়। এতে থাকতো ডাল-ভাত আর সবজি। অনুষ্ঠানের ১৫তম দিনের দুপুরের খাবারের আয়োজনটা করে স্থানীয় ‘যুব সমাজ’ নামে একটি সংগঠন। তাঁরা নিজেদের জমানো অর্থ দিয়ে ১০ হাজার মানুষের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করে। 

এতে রাখা হয়, ১০ হাজার বেগুনী, ১০ হাজার পটল ভাজিঁ, ১০ হাজার করলা ভাজিঁ, ১০ হাজার কুমড়া ভাজিঁ, ১০ হাজার আলু ভাজিঁ, ১০ হাজার শুকনা মরিচ ভাজিঁ, ডাল, সবজির তরকারি, ফল দিয়ে তৈরি চাটনি, পোলাও ভাত ও মিস্টান্ন। নিরামিষ এই খাবার তৈরি করতে কোন বাবুর্চি রাখা হয়নি। 

খাবার রান্না করে যুবকদের নিজেদের পরিবারের মা, বোনসহ স্বজনরা। রান্নার কাজে প্রায় দুই শতাধিক নারী কাজ করলেও খাবার পরিবেশনা করার জন্য প্রায় ৩ শতাধিক যুবক কাজ করেন। 

শনিবার বিকেলে দেখা গেলো মন্দির প্রাঙ্গণে খোলা জায়গায় হরিনাম সংকীর্তন হচ্ছে। যেখানে ভক্তরা গান শুনছেন। তার পাশেই একটু এগুলেই বিশাল এক খাবারের সমাহার। খাবার রান্নার জন্য ১৫টি মাটির চুলা কাটা হয়েছে। এসব চুলায় ৪২টি ডেক, বড় ২২টি লোহার কড়াইয়ে রান্না হচ্ছে এসব হরেক রকমের খাবার। 

সবার জন্য স্টিলের থালায় থালায় খাবার বেড়ে রেখে দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবকরা। মাটিতে চাদর বিছিয়ে খেতে আসা মানুষদের সারি সারি লাইন ধরে বসানো হয়েছে। এক সঙ্গে আড়াইশ থেকে তিনশ লোকের খাওয়ানো শেষ না হতেই ফের মানুষ এসে জড়ো হচ্ছে।

মাদারীপুর শহর থেকে আসা দিপালী রানী ঘোষ বলেন, ‘এখানে নানা ধরনের নিরামিষ প্রসাদের আয়োজন করা হয়েছে। খুব তৃপ্তি নিয়ে প্রসাদ গ্রহণ করেছি। সব খাবারই খুব সুস্বাদু। খুব ভাল খেয়েছি।’

আমিরাবাদ থেকে আসা আরেক নারী বলেন, এখানে দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকরা খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে খাবার পরিবেশন করেছে। প্রতিটি খাবারের থালায় পোলাও, বেগুনী, পটল ভাজা, পালং শাক, আলু ফুলকপির তরকারি, চাটনী, পায়েসসহ আরও অনেক কিছু সাজানো ছিলো।’

শহরের চরমুগরিয়া থেকে আসা দিপঙ্কর সাহা বলেন, আমার পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখানে আসছি। পরিবারের সবাই একসঙ্গে দুপুরে পেটভরে সুস্বাদু খাবার খেতে পেরেছি। সকলের ব্যবহার খুবই ভালো ছিল।

মস্তফাপুর বাজার শ্রী শ্রী রাধাগোবিন্দ মন্দির যুব কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় রায় বলেন, ৯ দিন ভাগবত ও সাত দিন নাম যজ্ঞের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আজ শেষ দিন। আমাদের যুব সমাজের উদ্যোগে, পূণ্য লাভের আশায় ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে দশ হাজার ভক্তদের জন্য প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে পোলাও থেকে শুরু করে বারোটি আইটেমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

 
 

এমএস

×