ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বরিশালে জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত জনজীবন

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৩:০২, ৩০ মে ২০২৫

বরিশালে জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত জনজীবন

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বর্ষণের পাশাপাশি বরিশাল বিভাগের সবগুলো নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। 

টানা বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে বরিশালের অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরনের লঞ্চ চলাচল দ্বিতীয় দিনের মতো আজ শুক্রবার (৩০ মে) সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। নদীবন্দরে ২ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল যাত্রীবাহী ও মালবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্র্যাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক এবং বরিশাল নদীবন্দরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম রেজা।

আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৬ কিলোমিটার। ফলে  দ্রুতগতিতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল অঞ্চলের কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, গজারিয়া ও কালাবদরসহ একাধিক নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

টানা বৃষ্টির কারণে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র জলাবদ্ধতা। নগরীর বগুড়া রোড, মুন্সি গ্যারেজ, শীতলাখোলা মোড়, জিয়া সড়কসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পানি জমে গেছে। এতে করে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারীরা। 

বগুড়া রোডের বাসিন্দা মিসবাহ হোসেন বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়। এখনতো ২৪ ঘণ্টার বেশি টানা বৃষ্টি হচ্ছে। তাই জলাবদ্ধতার কারণে বাসা থেকে বের হওয়া যায় না।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক শেখ বলেন, ‘আমার দোকানে পানি ঢুকে গেছে। মালামাল উঁচুতে তুলেও রক্ষা করতে পারিনি। জলাবদ্ধতার জন্য ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে।’

সচেতন নগরবাসীর অভিযোগ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারে বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বিসিসি থেকে বাস্তবে কোনো উন্নয়ন হয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের নিচু এলাকাগুলো জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত হয়ে পরছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারী বৃষ্টিপাত আর নদ-নদীর পানি বৃদ্ধিতে বরিশালের মেঘনা তীরবর্তী হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, মুলাদী, বাকেরগঞ্জ, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, গলাচিপা, দশমিনা, বাউফল, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া, স্বরূপকাঠি, নাজিরপুর, ভান্ডারিয়া, বরগুনা জেলার সদর, পাথরঘাটা, বেতাগী, আমতলী, তালতলী, ভোলা জেলার চরফ্যাশন, তজুমদ্দিন, দৌলতখান উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। 

মিরাজ খান

×