
ছবি: সংগৃহীত।
দেশজুড়ে গত দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে জনজীবন ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। কর্মজীবনে চরম অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে যেখানে বৃষ্টির কারণে রাস্তা জলাবদ্ধ হয়ে চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কাও বেড়েছে। এই বৃষ্টি আর কতদিন অব্যাহত থাকবে? আবহাওয়া অফিসের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য জানা গেল।
গতকাল থেকে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে টানা ভারী ও হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢাকা, রাস্তাঘাটে জমে থাকা পানি জনজীবনে ভোগান্তি বাড়িয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ধীরে ধীরে ঘন হয়ে নিম্নচাপ এবং পরে গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। এটি গত বৃহস্পতিবার রাতেই উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে উঠে এসে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৯ টার দিকে এই নিম্নচাপ টাঙ্গাইল ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গিয়ে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, বৃষ্টি ও ঝড়ের সম্ভাবনা মাথায় রেখে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় নদী বন্দরগুলোতে দুই নম্বর এবং অন্যান্য স্থানে এক নম্বর সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বিশেষ করে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে ঘন্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। যার ফলে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কাও রয়েছে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যেমন ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মালিবাগ, বাড্ডা, গুলশান ইত্যাদি স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, যা যান চলাচল ব্যাহত করছে এবং বাসিন্দাদের ভোগান্তি বাড়িয়েছে।
এছাড়াও ফেনী, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট ও নেত্রকোনায় বন্যার আশঙ্কা বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নদীগুলোর পানি বিপদসীমার উপরে উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে ফেনীর মুহুরী নদী ও সিলেট বিভাগের মনু, ধোলাই, জাদুকাটা ও খোয়াই নদীর পানির স্তর দ্রুত বাড়ছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড. আবুল কালাম মলিক জানিয়েছেন, রোববার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের এই প্রবণতা বজায় থাকবে। তবে সোমবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। বর্ষার মৌসুমের আগমন এবং মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আগামী সপ্তাহ জুড়েই বৃষ্টিপাত হতে পারে, যদিও তা এতটা টানা ও ভারী হবে না।
নুসরাত