
.
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে ফাইনাল ম্যাচে জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখের মাঠ অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারানায় ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হচ্ছে ফ্রান্সের প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি)। এই ম্যাচে ইন্টারকে হারাতে পারলেই নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জয়ের স্বাদ পাবে প্যারিসের পরাশক্তিরা। এরমধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক ট্রেবল ঘরে তুলতে পারবে তারা। ম্যাচটি শুরু হবে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে সনি টেন ২ চ্যানেল।
ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে জয়ের জন্য বস্তা বস্তা টাকা নিয়ে তারকা ফুটবলার কেনার বাজারে নামে পিএসজি। কিন্তু জøাতান ইব্রাহিমোভিচ, এদিনসন কাভানি, নেইমার, কিলিয়ান এমবাপে ও লিওনেল মেসির মতো তারকাদের নিয়েও চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে পারেনি তারা। কিন্তু এবারের পিএসজি একেবারই ভিন্ন রকম। মেসি, এমবাপের মতো তারকা নেই বটে। কিন্তু ট্রফি জিততে যে সঙ্ঘবদ্ধতা এবং ঐক্য থাকা দরকার, সেটা দেখা যাচ্ছে পিএসজিতে।
এই ক্লাবটির সর্বোচ্চ সাফল্য হিসেবে ২০১৯-২০ মৌসুমে ফাইনাল খেলেছে। কিন্তু জয়ের দেখা পায়নি। চোখ ভরা জল নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। সেবার বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ১-০ গোলে হেরে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় পিএসজিকে। তবে এবার নতুন করে ইতিহাস লেখার সম্ভাবনা জাগিয়েছে কোচ লুইস এনরিকের দলটি। মৌসুম জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে তারা। এবার সুবর্ণ এই সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চান না লুইচ এনরিক। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবাই ইতিহাস গড়তে চাই এবং পিএসজির হয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে চাই। প্রথমবার ট্রফি জেতা সব সময় কঠিন। কিন্তু এটাই আমাকে উজ্জীবিত করছে। এখন কেবল দুটি টিকে আছে এবং ম্যাচও বাকি একটা। আমি মনে করি আমরা যা অর্জন করেছি, তা নিয়ে গর্ব করা যায়; কিন্তু আমাদের কাজটা শেষ করতে হবে। কারণ, আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিহাসে নাম লেখানো।’
পিএসজির এই দল ট্রফি জেতার যোগ্য উল্লেখ করে এনরিকে বলেছেন, ‘আমাদের দল এই ফাইনাল খেলার যোগ্য। কোনো সন্দেহ নেই যে পিএসজির সমর্থকেরা এবং ক্লাবটি এই ট্রফি জেতার যোগ্য। আমি জানি না, এটা ৩১ মে ঘটবে, নাকি এক, দুই, তিন বা চার বছর পর ঘটবে। তবে আমি আশা করি, আমরা প্রথমবারেই সেই ইতিহাস লিখব। কারণ, প্যারিসে প্রথমবার পা রাখার পর থেকে এটাই আমাদের প্রেরণা। আমরা সবাই একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পে কাজ করতে চাই। কিন্তু আপনি যখন ফুটবলে দীর্ঘ সময় কাজ করবেন, তখন বুঝতে পারবেন যে “আমরা পরের মৌসুমে শিরোপা জিতব”, এটা বলার সুযোগ এখানে নেই। কারণ, পরের মৌসুমে অন্য কোনো দল হয়ত আপনার দলের চেয়ে ভালো হবে। তাই আমাদের এখনই জিততে হবে।’
এদিকে পিএসজির সমর্থনে বিশ্ব বিখ্যাত আইফেল টাওয়ারকে রাঙিয়ে তোলা হবে। তারা গোল করলেই সেই আইফেল টাওয়ারেও তার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে প্যারিস শহরের মেয়র আনে হিদালগো জানিয়েছেন, ‘শনিবার আমাদের এখানে সবাই পিএসজিকেই সমর্থন করবে। ফ্রান্স চ্যাম্পিয়নশিপ আর কাপ ডে ফ্রান্সের পর আমরা সবাই পিএসজির সঙ্গেই রয়েছি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল জয়ের ব্যাপারে। প্যারিসের ফুটবল ইতিহাসে একটা আদালা জায়গা রয়েছে।
পিএসজি আমাদের স্বপ্ন দেখানো শুরু করেছে, আর আমরাও আশা করব প্যারিস ঝকঝক করবে তাদের সাফল্যে’।
ফাইনাল ম্যাচটি ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। যাতে খেলার সময় বা পরেও কোনো রকম অশান্তি তৈরি না হয়। তাই ফ্রান্সের রাজধানীতে ইতোমধ্যেই ৫৪০০ পুলিশ কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। একমাত্র ফরাসি দল হিসেবে ইউরোপিয়ান লিগ বা চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের নজির রয়েছে মার্সেইলির। ১৯৯৩ সালে ট্রফি জিতেছিল তারা। মার্সেইলি যেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, সেবারও তারা মিলানের একটি দলকেই হারিয়েছিল, সেটা ছিল এসি মিলার।
প্যানেল