
অর্ধশতকের পর দর্শক অভিবাদনের জবাব দিচ্ছেন ফরচুন বরিশালের উদ্বোধনী ব্যাটার তামিম ইকবাল
টানা ৪ ম্যাচ জিতে এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) শীর্ষস্থানে এককভাবে ছিল খুলনা টাইগার্স। এর পরই ছন্দপতন ঘটে তাদের এবং হেরে যায় একটানা ৫ ম্যাচ। তাতে করে প্লে-অফ পর্বে ওঠার রাস্তাটা হয়ে যায় কঠিন। তবে রাউন্ড রবিন লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ক্ষীণ সুযোগ থাকতে পারত যদি শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে ফরচুন বরিশাল হেরে যেত।
তবে তাদের হতাশায় ভুগিয়ে কুমিল্লাকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে বরিশাল এবং সর্বশেষ দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে। তাতে আনুষ্ঠনিকভাবে এবারের আসর থেকে বিদায় ঘটে খুলনার। এদিন আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে মাত্র ১৪০ রানের মামুলি সংগ্রহ গড়ে কুমিল্লা। জবাবে তামিম ইককালের ৪৮ বলে ৬৬ রানের সুবাদে ১৯.৪ ওভারে ৪ উইকটে ১৪১ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় বরিশাল। শেষ দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করলেও তারা ৭ জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে থেকেই লিগ পর্ব শেষ করেছে। এলিমিনেটর ম্যাচে সোমবার চতুর্থ স্থানে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মুখোমুখি হবে তারা। আগেই চট্টগ্রাম প্লে-অফে ওঠে এবং বরিশালের সমান ১৪ পয়েন্ট হলেও নেট রানরেটের জন্য পিছিয়ে থেকে চতুর্থ হয়েছে তারা।
দশম বিপিএল আসরে রবিন লিগ পর্বের শেষ দিন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয় বরিশাল-কুমিল্লা। বরিশালের ফলের পর তাদের প্লে-অফে ওঠার বিষয়টি নির্ভরশীল। আর কুমিল্লা জিতে গেলে শীর্ষস্থানে থাকার বিষয়টি রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে হিসাব-নিকাশ হবে। সেই ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে কুমিল্লা। প্রথম থেকে রান তুলতে হিমশিম খেয়েছে তারা। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ১ উইকেটে মাত্র ৩৭ রান করতে সক্ষম হয়। এরপর নবম ওভারের প্রথম বলেই তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৪০। চতুর্থ উইকেটে অবশ্য তাওহিদ হৃদয় ও মঈন আলী ৩৬ রানের জুটি গড়েন ৩০ বলে। কিন্তু তাওহিদ ২৬ বলে ৩ চারে ২৫ রানে বিদায় নেন। মঈনও ২২ বলে ১টি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ২৩ রানে সাজঘরে ফেরেন। এরপর শেষদিকে শুধু জাকের আলী অনিক ১৬ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৮ রানের হার না মানা ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন। এতেই ৮ উইকেটে ১৪০ রানের একটি সংগ্রহ পেয়েছে কুমিল্লা। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৩ ওভারে ২০ রানে ৩ উইকেট নেন। পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানে এবং ওবেদ ম্যাককয় ২টি করে উইকেট নেন।
জবাব দিতে নেমে দলীয় ১০ রানে আহমেদ শেহজাদের (১) উইকেট হারায় বরিশাল। কিন্তু তামিম ও কাইল মেয়ার্স দ্বিতীয় উইকেটে ৬৪ রানের জুটি গড়ে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান দলকে। ২৫ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ২৫ রানে বিদায় নিলেও তামিম অর্ধশতক হাঁকান। তৃতীয় উইকেটে তিনি মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৩৯ রানের জুটি গড়েন। ১৮তম ওভারে তামিম ৪৮ বলে ৬ চার, ৩ ছক্কায় ৬৬ রানে বিদায় নিলেও জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে বরিশাল। সেখান থেকে ২ বল বাকি থাকতেই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (১১ বলে ১২) ও সৌম্য সরকার (৩ বলে ৬)। পেসার মুশফিক হাসান ৩.৪ ওভারে ১৯ রানে ২ উইকেট নেন। তামিম এদিনের ৬৬ রানের ইনিংসটির সুবাদে চলতি আসরে সর্বাধিক ৩৮৪ রানের মালিক হয়েছেন।
স্কোর ॥ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ইনিংস- ১৪০/৮; ২০ ওভার (জাকের ৩৮*, তাওহিদ ২৫, মঈন ২৩; তাইজুল ৩/২০, সাইফউদ্দিন ২/১৬, ম্যাককয় ২/৪০)।
ফরচুন বরিশাল ইনিংস- ১৪১/৪; ১৯.৪ ওভার (তামিম ৬৬, মেয়ার্স ২৫, মুশফিক ১৭; মুশফিক হাসান ২/১৯)।
ফল ॥ ফরচুন বরিশাল ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ তামিম ইকবাল (বরিশাল)।