ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিব-তামিমদের সম্মানজনক বিদায় চান মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৪১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩

সাকিব-তামিমদের সম্মানজনক বিদায় চান মাশরাফি

মাশরাফি বিন মর্তুজা

আনুষ্ঠানিক কোনো অবসর নেননি মাশরাফি বিন মর্তুজা। ইনজুরির কারণে ২০০৯ সালের পর থেমে গেছে টেস্ট ক্যারিয়ার। ২০১৭ সালে ছেড়েছেন টি২০ এবং ২০২০ সালে ওয়ানডে। ওয়ানডে ও টি২০ ক্যারিয়ারে ইতি টেনেছেন হুট করে নেওয়া সিদ্ধান্তে। ওয়ানডে থেকে এখনো অবসরের ঘোষণা দেননি, এমনকি ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক এ অধিনায়ক। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিতে না পারার ক্ষেত্রে কোনো আক্ষেপ নেই তার।

কিন্তু মাশরাফি চান মাঠ থেকেই বিদায় নেওয়ার সংস্কৃতি তৈরি হোক বাংলাদেশের ক্রিকেটে। দীর্ঘদিনের সতীর্থ সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বিদায় আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠ থেকে হওয়ার মাধ্যমেই এই প্রক্রিয়ার শুরু দেখতে চান তিনি। বৃহস্পতিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলনে এসে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় এ মন্তব্য করেন মাশরাফি। 
কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়া, বিন্দুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা থেমে গেছে মাশরাফির। কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতার ইচ্ছাও পোষণ করেননি। এ বিষয়ে অনেকবারই কথা হয়েছে। কিন্তু মাশরাফি চাননি ঢাকঢোল পিটিয়ে অবসরে যেতে। তাই মাঠ থেকে শেষ হয়নি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেটার মাশরাফির। অবশ্য তিনি চাইছেন সাকিব, তামিমরা যেন মাঠ থেকেই অবসরে যেতে পারেন। তিনি এ বিষয়ে বলেছেন, ‘আমি নিজেরটা বলতে পারব না, কারণ অনেকদিন আগেই ছেড়ে এসেছি। আমার কোনো প্রত্যাশা নেই। আমি নিজেও বিশ্বাস করি না আমার ক্ষেত্রে।

আমার আসলে এসব নিয়ে রাগ-ক্ষোভ কিছুই না। কেবল বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা আছে। অবশ্যই ক্রিকেটারদের সম্মানের সঙ্গে মাঠ থেকে অবসরে যাওয়ার সংস্কৃতিতে যাওয়া উচিত আমাদের। ওই সংস্কৃতি চালু করা দরকার।’ মাশরাফির দাবি সাকিব, তামিমরা বাংলাদেশ ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র। ১৬ বছর ধরে জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলে তারা হয়ে গেছেন দেশের ক্রিকেটের কিংবদন্তি। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘কেউ স্বীকার করুক বা না করুক- সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ, তামিম তারা বাংলাদেশের কিংবদন্তি। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাদের ক্ষেত্রে যেন ওই সুযোগ বাংলাদেশের মানুষ পায়, তারা যেন ওই সম্মানটা নিয়ে মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারে, সে কাজটা নিশ্চিত করা খুব জরুরি।’
দেশের হয়ে ২২ গজে একটানা ১৬ বছর খেলা চাট্টিখানি কথা নয়। সব ক্রিকেটারের পক্ষে তা সম্ভব হয় না। একমাত্র কিংবদন্তিরাই এমনটা পারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টানা দীর্ঘ সময় খেলতে। তাই এমন ক্রিকেটারদের মর্যাদা ও সম্মান অনেক বেশি হওয়া উচিত। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘মানুষ তো হিসাব করে কত টাকা পেল। কিন্তু তারা যে শ্রম দিয়েছে, দিনের পর দিন ত্যাগ করেছে, এটা কেউ জানে না। ওই সম্মানটা যেন তারা পায়, সে সুযোগ ও মঞ্চ তৈরি করে দেওয়া খুব দরকার।

তাতে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানবে, বুঝবে যে দীর্ঘদিন জাতীয় দলে খেলার পর সম্মান পাওয়া যায়। যারা মধ্য বয়সে আছে, তরুণ আছে, তাদের যেন বিশ্বাসটা আসে, আমাদের দেশ থেকে এতটুকু সম্মান নিয়ে যেতে পারব।’ পরবর্তী প্রজন্মে মেহেদি হাসান মিরাজ, লিটন কুমার দাস, তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলামরা সাকিব-তামিমদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন। তাদের পরে এমনকি নাজমুল হোসেন শান্তও আছেন। যদিও ধারাবাহিকতার সমস্যায় শান্ত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক হারে সমালোচিত।

এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে লড়াই করার সময়টা থাকতে পারে। মানসিকভাবে শক্তিশালী থাকা গুরুত্বপূর্ণ। যেটা শান্তর ক্ষেত্রে আমি দেখেছি লিটনের মতো বাইরের জিনিসগুলো এত কানে নেয় না। সেক্ষেত্রে আমার বিশ্বাস হয় এই ছেলেটা লম্বা রেসের ঘোড়া। আমি বিশ্বাস করি এই ছেলেটা বাংলাদেশকে অনেক কিছু দিতে পারবে।’

×