ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়ম এখন হাস্যকর লাগতে শুরু করেছে ॥ সম্বরণ

প্রকাশিত: ২০:০৬, ২২ নভেম্বর ২০১৮

ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়ম এখন হাস্যকর লাগতে শুরু করেছে ॥ সম্বরণ

অনলাইন ডেস্ক ॥ ক্রিকেটে কোশেন্ট থেকে শুরু করে ‘রেন-রুলস’, এই সব বোঝার ক্ষেত্রে একজনকে আমি মাস্টার বলে মনে করি। তিনি এখন বাংলা দলের মেন্টর হিসেবে ফিরে আসা অরুণ লাল। বাংলার হয়ে যখন খেলতাম, তখন এই সব অঙ্ক কষার দায়িত্ব থাকত অরুণের ওপরেই। সব নিয়ম জলের মতো বুঝতে পারতেন। সেই অরুণই ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়ে একবার আমাকে বলেছিলেন, ‘‘কী ভুতুড়ে নিয়ম। কিছুই বুঝতে পারি না।’’ অরুণ ভুল কিছু বলেননি। এত দিন ধরে ক্রিকেট দেখছি, এই নিয়মটা এখনও বুঝতে পারলাম না। বুধবারও যে কী হল! স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া ১৭ ওভারে চার উইকেটে ১৫৮। সেখানে ১৭ ওভারে ভারতের রান সাত উইকেটে ১৬৯। অর্থাৎ ১১ রান বেশি করেও হেরে গেল ভারত। কারণ, আইসিসি-র এই অদ্ভুত নিয়মের জন্য ভারতের লক্ষ্য হয়ে গিয়েছিল ১৭ ওভারে ১৭৪। জয়ের লক্ষ্য থেকে পাঁচ রান দূরে থেমে গেল কোহালির দল। ব্রিসবেনের খেলাটা দেখতে দেখতে আরও একটা ম্যাচের কথা মনে পড়ছিল। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে সিডনিতে দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডকে হারানোর জন্য ১৩ বলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে করতে হত ২২। কিন্তু বৃষ্টিতে সাময়িক খেলা বন্ধ থাকার পরে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্যটা দাঁড়িয়েছিল এক বলে ২২। ওই হাস্যকর ঘটনার জোর সমালোচনা হয়েছিল। আইসিসি পরে বাধ্য হয় নিয়ম বদলাতে। ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়ম যখন এসেছিল, সকলে খুব স্বাগত জানিয়েছিল। এখন কিন্তু হাস্যকর লাগতে শুরু করেছে। আইসিসি-র উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন কোনও নিয়ম আনা। পাশাপাশি এটাও বলব, ডাকওয়ার্থ-লুইসের নিয়মের বেড়াজালে আটকে যাওয়া সত্ত্বেও ভারত সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি জিততে পারত। বিশেষ করে রান তাড়া করতে নেমে যখন শিখর ধওয়ন ও রকম ইনিংস খেলে দিলেন। প্রথম বলটাই ওই ভাবে কভার দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠাতে পারলে যে কোনও ব্যাটসম্যানেরই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যেতে বাধ্য। ধওয়নের ওই কভার ড্রাইভ নিঃসন্দেহে দিনের সেরা শট। কিন্তু তিনটে ভুলের খেসারত দিতে হল ভারতকে। এক) দীনেশ কার্তিকের আগে ঋষভ পন্থকে ব্যাট করতে পাঠানো। কার্তিক পোড় খাওয়া ব্যাটসম্যান। এই তো শ্রীলঙ্কার নিদাহাস ট্রফিতে প্রায় একই রকম অবস্থা থেকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। সব সময় ডান হাতি-বাঁ হাতি জুটির কথা ভাবলে চলবে না। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পন্থের আউট হওয়াটাও বড় ধাক্কা ছিল। দুই) কোহলির নিজে না এসে তিন নম্বরে কে এল রাহুলকে নামানো। বড় রান তাড়া করছে ভারত। রোহিত শর্মা আউট। সেখানে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান নামবেন না? আমার তো মনে পড়ে না, রিকি পন্টিং কোনও দিন তিন নম্বর জায়গা ছেড়েছিলেন বলে। তিন) শেষ ওভারের প্রথম বলে ক্রুণাল পাণ্ড্যের দু’রান নেওয়া। প্রথম অস্ট্রেলিয়া সফর। ব্রিসবেনের মতো বড় মাঠ। ওখানে কি নেমেই বিগ হিট নেওয়া অত সোজা? শেষ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। এক রান নিয়ে কার্তিককে দিলে অঙ্কটা দাঁড়াত পাঁচ বলে ১২। সে ক্ষেত্রে কিন্তু ভারতের একটা সুযোগ থাকত। ক্রুণাল দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বলটা নষ্ট করে ম্যাচ হাত থেকে বার করে দেন। ব্রিসবেনে দুই রিস্টস্পিনারের (যাঁরা কব্জির মোচড়ে বল ঘোরান) দাপটও দেখলাম। ভারতের কুলদীপ যাদব এবং অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জাম্পা। কুলদীপ চার ওভারে ২৪ রান দিয়ে দু’উইকেট নিলেন, জাম্পা চার ওভারে ২২ রানে দুই। ভারত যখন ম্যাচটাকে ধরে নিচ্ছে, তখনই একটা আঁটসাঁট স্পেলে কে এল রাহুল ও বিরাট কোহালির উইকেট নিয়ে চাপ তৈরি করে দিলেন অস্ট্রেলীয় লেগস্পিনার। ম্যাচের সেরাও জাম্পা। ব্রিসবেনের উইকেটে বাউন্স আছে। যার ফায়দা তুললেন রিস্টস্পিনাররা। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×