
এশিয়া কাপের লগো
টেস্ট কিংবা ওয়ানডে ক্রিকেটে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে যাত্রা শুরু করেছে দলগুলো। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশ হিসেবে এখন যারা আছে তার মধ্যে দশম দল হিসেবে ১৯৮৬ সালে ওয়ানডে এবং ২০০০ সালে টেস্ট ক্রিকেটে পদার্পণ করে বাংলাদেশ। সময়ের এই ব্যবধানকে অজুহাত হিসেবে নেওয়া হয় অন্য দলগুলোর সঙ্গে পার্থক্য থাকার পেছনে।
তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ফরমেট টি২০-তে প্রায় একই সময়ে দলগুলো খেলতে শুরু করেছে। কিন্তু আইসিসির পুর্ণ সদস্য দেশই শুধু নয়, আরও অনেক দলই বাংলাদেশের চেয়ে টি২০ ফরমেটে দুর্দান্ত। অনেক চেষ্টা করেও টি২০-তে শুধু ক্রমোবনতিই ঘটছে। তাই এবার ভিন্নভাবে চিন্তা করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আসন্ন এশিয়া কাপ টি২০ আসর থেকে সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পুরোপুরি ‘নতুন শুরু’ করবে বাংলাদেশ দল। এমনটাই বৃহস্পতিবার ক্রিকেটারদের অনুশীলন দেখতে এসে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
গত টি২০ বিশ্বকাপ থেকেই মূলত টি২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় পতন শুরু হয়েছে বাংলাদেশ দলের। প্রাথমিক রাউন্ডে স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে সুপার টুয়েলভ পর্বে যাওয়ার শঙ্কায় পড়তে হয়। শেষ পর্যন্ত সুপার টুয়েলভে যেতে পারলেও কোন ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতায় বিশ্বকাপ ভরাডুবির পর ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে অনেকটাই বদলে ফেলা হয় টি২০ দল। সেটি ছিল প্রথম পরীক্ষা-নিরীক্ষা নতুন কিছু করার। তবে সেই পরীক্ষায় কোন লাভ হয়নি। এরপর আবার আগের চেহারাতেই ফেরানো হয় দলকে। তবে সাফল্য আসেনি। তাই আবার নতুন এক চেহারা দেওয়া হয় টি২০ দলকে এবং পর্যবেক্ষণ করে দেখার জন্য জিম্বাবুইয়ে সফরে পাঠানো হয়।
তবে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি বাংলাদেশ। তাদের কাছে এবারই প্রথম টি২০ সিরিজ হারাতে হয়েছে। এবার টি২০ এশিয়া কাপে সেই দলে আসছে আরও ভিন্নতা। ইনজুরির কারণেই খেলতে পারছেন না অনেকে। নতুন করে ফিরেছেন কয়েকজন। একেবারে নতুন মুখ কেউ না থাকলেও তাই সর্বশেষ দুই সিরিজে যেমন আলাদা অধিনায়ক ও আলাদা দল ছিল এবার এশিয়া কাপেও থাকছে আলাদা অধিনায়ক, আলাদা দল। এশিয়া কাপে সম্পূর্ণ নতুনভাবে শুরু করার পরিকল্পনা বিসিবির। এ বিষয়ে পাপন বললেন,‘সামনে এশিয়া কাপ। আমরা টি২০-তে ভাল দল না। তাই আমরা সম্পূর্ণ টি২০ ভাবনা হঠাৎ করে বদলে ফেলতে চাই। দেখতে চাচ্ছি একেবারে নতুনভাবে শুরু করা যায় কি না।’
এশিয়া কাপ অনেক বড় আসর। এর পরেই আসবে বিশ্বকাপ। এজন্য এই আসর থেকেই সম্পূর্ণ নতুনভাবে শুরু করে বিশ্বকাপের আগে দলকে থিতু করতে চাইছে বিসিবি। পাপন সেজন্য বললেন,‘আমরা নতুন কিছু করতে চাই, সেটা যদি এশিয়া কাপ থেকে না শুরু করি, তাহলে বিশ্বকাপে আরও খারাপ হবে। সে জন্য মানসিকতা থেকে শুরু করে সবকিছুতে একটা নতুন চিন্তা করতে চাই।’ নিয়মিত ইনজুরি সমস্যাও এখন বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সমাধানে তাই গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করছেন পাপন। নিয়মিত ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করে বিসিবি সভাপতি বুঝতে চেষ্টা করেন কি পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বিশ্বাস করেন- হারজিত থাকবেই খেলাতে, কিন্তু আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলাটা জরুরী। ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের সঙ্গে দলের পাওয়ার হিটিংসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেছেন তিনি।
পাপন বলেন, এশিয়া কাপ কিন্তু বিশ্বকাপের পরেই (বড় আসর)। গত বিশ্বকাপে আমাদের পারফর্মেন্স খুবই খারাপ ছিল। হঠাৎ করে এখন এত তাড়াতাড়ি বের হতে পারব কিনা জানি না। যদি আমরা জিততে চাই বা ভাল করতে চাই টি২০ ভাবনাটা পরিবর্তন করতে হবে। এটার কোন বিকল্প নেই। ১৩০ করে হয়ত একটা ম্যাচ জিততে পারবেন। এটা তো হতে পারে না। আমাদের ১৮০-২০০ করতে হবে। এটা মাথায় রাখতে হবে।’ সিডন্সের সঙ্গেই আলোচনায় পাপন জেনেছেন এক্ষেত্রে তার বিশেষত্ব আছে। তাই আপাতত যেহেতু অস্ট্্েরলিয়াতে বিশ্বকাপ, সিডন্সকে দিয়েই পাওয়ার হিটিংয়ের কাজ করানোর লক্ষ্য বিসিবির।
পাপন বলেন, আমরা দেখছি এই এশিয়া কাপটা না আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে পরবর্তী বিশ্বকাপ। কারণ, ওইটা আরও চ্যালেঞ্জিং। কারণ, ওইটা অস্ট্রেলিয়ায়। ওইসব জায়গায় তো আমরা এমনিতেই সংগ্রাম করি। সে কথা মাথায় রেখে আমরা কাজ করছি। এই এশিয়া কাপে আমরা কিছু জিনিস পরিবর্তন করে দেখতে চাচ্ছি যে সব ঠিক আছে কি না। ওঁটার জন্য তো আর বেশি সময় নেই। হঠাৎ করে যে একজন কোচ এনে সব উন্নতি করে ফেলব এটা ভাবা ঠিক হবে না।