
ছবি: সংগৃহীত
মাত্র ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যেই মানুষের মতো বা তার চেয়েও বুদ্ধিমান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AGI) তৈরি হবে—এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন Google-এর AI গবেষণা শাখা DeepMind-এর সিইও ডেমিস হাসাবিস (Demis Hassabis)। Wired-কে দেওয়া এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, এই উন্নত AI আমাদের কর্মদক্ষতা শুধু বাড়াবেই না, বরং মানব সভ্যতার জন্য একটি “সুবর্ণ যুগ”-এর দ্বারও খুলে দেবে।
হাসাবিস বলেন, “যদি সবকিছু ঠিকঠাক চলে, তাহলে আমরা একটি বিপুল প্রাচুর্যের যুগে প্রবেশ করব, যেখানে আমরা নক্ষত্রে পাড়ি দেব এবং আকাশগঙ্গায় উপনিবেশ গড়ব। আমি বিশ্বাস করি, এটি ২০৩০ সাল থেকেই শুরু হতে পারে।”
সুপারহিউম্যান কর্মী ও চাকরি রক্ষা
বর্তমানে AI চ্যাটবট, কো-পাইলট, এমনকি কোডিং টুল ইতোমধ্যেই অনেক ক্ষেত্রে মানুষের তুলনায় বেশি দক্ষ প্রমাণিত হচ্ছে। কিন্তু AGI তৈরি হলে কী মানব শ্রমের অবসান ঘটবে?
এই প্রশ্নের জবাবে Hassabis বলেন, “নতুন প্রযুক্তি মানেই চাকরি হারানো নয়। বরং প্রতিবারই নতুন প্রযুক্তি এসেছে, তা মানুষকে আরও দক্ষ করে তুলেছে। এই AI আমাদের প্রায় সুপারহিউম্যান করে তুলবে।”
তিনি আরও বলেন, “আপনি নিশ্চয়ই চান না একজন রোবট নার্স আপনাকে সেবা দিক। কিছু কাজ চিরকাল মানুষের জন্যই থেকে যাবে, বিশেষ করে যেখানে সহানুভূতি ও মানবিকতা দরকার।”
স্বপ্ন শুধু নয়, বাস্তব পরিকল্পনাও
DeepMind ইতোমধ্যেই এমন মডেল তৈরির পথে রয়েছে যা মানব বুদ্ধিমত্তার সমতুল্য বা তার চেয়ে বেশি দক্ষ। ৬০০ মিলিয়ন ডলারের এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, তারা সঠিক গতিতেই এগোচ্ছে।
হাসাবিস আরও বলেন, AGI এমন সব ‘মূল সমস্যা’ সমাধানে সক্ষম হবে—যেমন ক্যানসার বা জটিল রোগ নিরাময়, দীর্ঘতর জীবন, এবং নতুন জ্বালানির উৎস আবিষ্কার—যেগুলো বর্তমান প্রযুক্তির জন্য এখনো চ্যালেঞ্জ।
তবে সবাই এতটা আশাবাদী নন। AI কোম্পানি Anthropic-এর সিইও Dario Amodei ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, আগামী ৫ বছরে ৫০% এন্ট্রি-লেভেল চাকরি স্বয়ংক্রিয় হয়ে যেতে পারে। LinkedIn-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা Aneesh Raman বলেন, প্রযুক্তির প্রথম ধাক্কা চাকরির সিঁড়ির নিচের ধাপে পড়বে, যা কর্মসংস্থানে সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
যদিও AI নিয়ে মতভেদ রয়েছে, তবে Demis Hassabis-এর দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট—এটি মানবজাতির জন্য হুমকি নয়, বরং এক নতুন যুগের সূচনা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হতে পারে আমাদের পরবর্তী মহাকাশ যুগের সহযাত্রী।
Mily