
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ
উপকূলীয় অক্সফোর্ড নামে খ্যাত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) শুধুমাত্র শিক্ষা ও গবেষণার কেন্দ্রই নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক সমন্বয়েরও প্রতীক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থিত কেন্দ্রীয় মসজিদটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি শান্তির আশ্রয়স্থল। এই মসজিদ শুধু ধর্মীয় কার্যক্রমের কেন্দ্র নয়, বরং এটি সামাজিক সম্প্রীতি ও মানসিক প্রশান্তির একটি প্রতিচ্ছবি।
নোবিপ্রবির কেন্দ্রীয় মসজিদটি স্থাপত্যের দিক থেকে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার এক অপূর্ব সমন্বয়। এর নকশায় ইসলামী স্থাপত্যের ঐতিহ্যবাহী উপাদান যেমন মিনার রয়েছে, তেমনি রয়েছে আধুনিক নির্মাণশৈলীর ছোঁয়া। মসজিদের প্রশস্ত প্রাঙ্গণ ও উন্মুক্ত স্থান এটিকে একটি আমন্ত্রণমূলক পরিবেশ প্রদান করে। ভেতরের দেওয়ালে আরবি ক্যালিগ্রাফি ও ফুলের নকশা মনকে শান্ত করে। মসজিদের মিনারটি দূর থেকে দৃশ্যমান, যা ক্যাম্পাসের একটি ল্যান্ডমার্ক হিসেবে বিবেচিত। মসজিদের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত আলো ও বাতাসের ব্যবস্থা রয়েছে, যা নামাজ ও ধ্যানের জন্য একটি শান্ত পরিবেশ তৈরি করে। এর ধারণক্ষমতা প্রায় পাঁচ শতাধিক মুসল্লির, যা বিশেষ করে জুমার নামাজ ও ঈদের সময় ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়।
নোবিপ্রবির কেন্দ্রীয় মসজিদটি নোবিপ্রবির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য একটি আধ্যাত্মিক কেন্দ্র। এখানে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমার নামাজ এবং ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। রমজান মাসে এখানে তারাবিহ নামাজ ও ইফতারের আয়োজন করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করে। নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন ইসলামি ক্রীয়াশীল সংগঠনের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন ধর্মীয় আলোচনা, সেমিনার, কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা ও ইসলামী সংস্কৃতি বিষয়ক অনুষ্ঠানও এখানে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়।
ধর্মীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি মসজিদটি সামাজিক কার্যক্রমেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শিক্ষার্থদের জন্য একটি মিলনকেন্দ্র, যেখানে তারা একে অপরের সঙ্গে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে আলোচনা করে। বিশেষ করে পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা এখানে এসে মানসিক শান্তি খুঁজে পায়।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ শুধু একটি ধর্মীয় স্থাপনা নয়, এটি ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবনের একটি অবিচ্ছদ্য অংশ। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ ও সহমর্মিতা গড়ে তুলতে সহায়তা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মসজিদ প্রাঙ্গণ প্রায়ই ব্যবহৃত হয়, যেমন মিলাদ মাহফিল কিংবা বিভিন্ন জাতীয় দিবসের ধর্মীয় আলোচনা। মসজিদটি স্থানীয় মানুষদের জন্যও উন্মুক্ত, যা বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি সেতু তৈরি করেছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পায়।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ ক্যাম্পাসের একটি অমূল্য সম্পদ। এটি শুধু একটি ইবাদতের স্থান নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মানসিক শান্তি, সামাজিক বন্ধন ও নৈতিক উৎকর্ষের একটি উৎস। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার এই সমন্বয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি প্রেরণা, যারা এখানে এসে জ্ঞানের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক সমৃদ্ধি অর্জন করে।
পৃথী